আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার থেকে সেচ সংযোগ নেওয়া অবৈধ। কিন্তু সম্প্রতি আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার থেকে সেচ সংযোগ নেওয়া যাবে মর্মে মাইকিং করা হয়েছে নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। এরপর থেকে অবৈধ সংযোগ নেওয়ার হিড়িক পড়েছে।
Advertisement
মাইকিংয়ে বলা হয়, উপজেলার কৃষকদের ইরি-বোরো আবাদের কথা ভেবে সিংড়ার মাটি ও মানুষের নেতা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ও ইটালি ইউনিয়নে এ মাইকিং করা হয়। বিএনপি নেতার ওই মাইকিংয়ের পর ডাহিয়া ইউনিয়নের ডাহিয়া, আয়েশ, বিয়াশ, বেড়াবাড়ি, কাউয়াটিকরি, সরিষাবাড়ি, গাঁড়াবাড়ি, বড়গ্রাম ও আদিমপুর; ইটালী ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া ও হিজলী গ্রামে আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার থেকে সহস্রাধিক সংযোগ নিয়ে জমিতে সেচ দেওয়া শুরু করেছেন স্থানীয়রা।
বিষয়টি নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর নজরে আসার পর তাদের পক্ষ থেকে মাইকিং, প্রচারপত্র বিলি এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলা হচ্ছে, পল্লী বিদ্যুতের নিয়ম অনুযায়ী আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার থেকে সেচ সংযোগ নেওয়া অবৈধ।
Advertisement
এ বিষয় নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার ফকরুল আলম বলেন, নির্ধারিত স্থান থেকে বোরিং সেচযন্ত্র) স্থানান্তর করে দূরবর্তী স্থানে বৈদ্যুতিক তার টেনে বিদ্যুৎ ব্যবহার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি গ্রাহকদের অবহিত করা হচ্ছে।
উপজেলার ডাহিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজিব হোসেন। তার এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার থেকে সেচ সংযোগ নেওয়া যাবে মর্মে মাইকিং হচ্ছে জেনে তিনি সিংড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএমকে ফোন করেছিলেন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য। পরে জানতে পারেন বিষয়টি সঠিক নয়। কিন্তু তারপরও থেমে নেই অবৈধ সংযোগ নেওয়া।
ডাহিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনুর অনুসারীরা রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে পাল্লা ভারী করতে এমন মাইকিং করেছেন। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বিভ্রান্তি এবং হয়রানি হচ্ছেন কৃষকরা।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেন, সিংড়ায় আওয়ামী লীগের সময়ে এসব এলাকার কৃষকরা আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ থেকে মোটর (সেচযন্ত্র) চালিয়ে আসছেন। তবে কৃষকরা এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। তাই সেচের জন্য আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিটার ব্যবহার করতে তিনি ইউএনও এবং পল্লী বিদ্যুতের কাছে অনুরাধ করেছিলেন কাছে। কোনো ধরনের প্রচার বা মাইকিং করার বিষয়টি তার অগোচরে হয়েছে।
Advertisement
বিএডিসি সেচ কমিটির সভাপতি ও সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, আবাসিক সংযোগ থেকে সেচ কাজে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি। যার মাধ্যমে আবাসিক সংযোগ থেকে সেচ কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়ে মাইকিং করা হয়েছে তাকে খোঁজা হচ্ছে। কোনো ধরনের অনিয়ম মানা হবে না।
রেজাউল করিম রেজা/এসআর/এমএস