নবি-রাসুলদের ভূখণ্ড হিসেবে শাম ইসলামে বিশেষ বরকত ও মর্যাদার অধিকারী। কোরআনে মসজিদ আল আকসা সংলগ্ন শাম অঞ্চলের একাংশ বা পুরো শামকেই আল্লাহ তাআলা ‘পবিত্র ভূমি’ বলেছেন। (সুরা মায়েদা: ২১) কোরআনের ব্যাখ্যাকারদের মতে শাম আল্লাহর বহু নবি-রাসুলের স্মৃতিধন্য হওয়ায় এই অঞ্চলকে ‘পবিত্র’ বলা হয়েছে।
Advertisement
হজরত ইবরাহিম (আ.) নিজের জন্মভূমি ছেড়ে শাম অঞ্চলে হিজরত করেছিলেন। জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি শামেই বসবাস করেছেন। শামেই তার মৃত্যু হয়েছে এবং তার কবরও শামে। হজরত মুসা (আ.) বনি ইসরাইলকে নিয়ে আল্লাহর নির্দেশে মিশর ছেড়ে শামে হিজরত করেছিলেন। হজরত ইসার (আ.) জন্মও এই শাম অঞ্চলে। এ ছাড়া হজরত ইসহাক (আ.), হজরত ইয়াকুব (আ.), হজরত ইউসুফ (আ.), হজরত দাউদ (আ.) ও হজরত সুলাইমানসহ (আ.) আরও অনেক নবি-রাসুল শামে বসবাস করেছেন।
প্রাচীন শাম এখন কয়েকটি রাষ্ট্রে বিভক্ত। সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন ও পূর্ণ ফিলিস্তিন ভূখণ্ড প্রাচীন শাম অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আমাদের নবি হজরত মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনকালে শাম রোমকদের শাসনাধীন ছিল। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, শাম মুসলমানদের অধিকারে আসবে। তিনি শামে বরকত দান করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়াও করেছিলেন।
Advertisement
ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দোয়া করলেন,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي شَامِنَا اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي يَمَنِنَا
অর্থাৎ হে আল্লাহ! শামে আমাদের জন্য বরকত দান করুন। হে আল্লাহ! ইয়েমেনে আমাদের জন্য বরকত দান করুন।
সাহাবিগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের নাজদের জন্যও দোয়া করুন। নবিজি (সা.) আবারও বললেন, হে আল্লাহ! শামে আমাদের জন্য বরকত দান করুন। হে আল্লাহ! ইয়েমেনে আমাদের জন্য বরকত দান করুন। এবারও সাহাবিগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের নাজদের জন্যও দোয়া করুন। নবিজি (সা.) বললেন, ওখানে ভূমিকম্প ও ফিতনাসমূহ সংঘটিত হবে এবং ওখান থেকে শয়তানের শৃঙ্গ উদিত হবে। (সহিহ বুখারি: ১০৩৭)
Advertisement
আল্লাহর রাসুলের (সা.) ওফাতের কয়েক বছর পরে হজরত ওমরের (রা.) শাসনকালে মুসলমানরা শাম বিজয় করে। আল্লাহর রাসুলের (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী সত্যে পরিণত হয়।
ওএফএফ/এমএস