পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ‘চূড়ান্ত ডাক’ কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে রাজধানী ইসলামাবাদে যাচ্ছেন তার হাজার হাজার সমর্থক। এ নিয়ে দেশটির বিভিন্ন জায়গাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ফেসবুক পেজে সমর্থকদের দলে দলে রাজধানীর দিকে আসার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
Advertisement
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ দমাতে এরই মধ্যে বিভিন্ন গেস্ট হাউজ, হোস্টেলে অভিযান চালিয়েছে ইসলামাবাদ পুলিশ। এসব জায়গা থেকে পিটিআই সমর্থক ও কর্মীদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে।
আরেক পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, দেশের প্রায় সব জায়গায় হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ইসলামাবাদে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা।
পিটিআইয়ের এই কর্মসূচি কেন্দ্র করে ইসলামাবাদে গত সপ্তাহে টানা দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই এখন ইসলামাবাদের দিকে যাচ্ছেন ইমরানের সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত সেখানে কী ঘটে এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এছাড়া সেখানকার বড় সড়ক ও দোকানপাট বন্ধ।
Advertisement
ডন জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে পিটিআইয়ের বহর সকাল সকাল রওয়ানা দেয়। তবে তাদের আটকাতে জিটি রোড ও অ্যাটকের হাসনাবদালে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাঞ্জাবেও তিনদিনের ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বিক্ষোভের জেরে ইসলামাবাদজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শহরের প্রধান সড়কগুলো ঘিরে রাখা হয়েছে ও রেড জোনে যাওয়ার দিকে রাস্তাগুলো ব্লক করা হয়েছে।
এছাড়া শহরজুড়ে বিভিন্ন কনটেইনার রাখা হয়েছে। শ্রীনগর হাইওয়ে থেকে শুরু করে জিটি রোড, এক্সপ্রেসওয়েতে অসংখ্য কনটেইনার রাখা হয়েছে। ডি-চৌক, ইসলামাবাদ বিমানবন্দর, এ-১১ পয়েন্টে প্রবেশাধিকার কমানো হয়েছে। এলাকাগুলোতে নজরদারিতে দিতে রেঞ্জার, পুলিশ ও ফ্রন্টিয়ার কন্সটাবুলারি মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের বেআইনি বিক্ষোভ রুখে দেওয়ার সতর্ক বার্তা দিয়েছে ফেডারেল সরকার।
কারাবন্দি ইমরান খান তার আইনজীবীদের মাধ্যমে আগামী ২৪ নভেম্বর পুরো পাকিস্তানে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২৪ নভেম্বর বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হবে ইসলামাবাদ। পাকিস্তান ও বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হবে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন শেষ হবে না।
Advertisement
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। পিটিআইয়ের দাবি, মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
গত ১৩ নভেম্বর পাকিস্তানে কারাগারে থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন-সংক্রান্ত সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী প্রত্যাহার এবং বিনা বিচারে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে পিটিআই।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি বলেন, ইমরান খানকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হলে ও তিনি জনগণকে নির্দেশনা দিলে তবেই বিক্ষোভের তারিখ পরিবর্তন করা যেতে পারে।
সূত্র: জিও নিউজ, ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
এসএএইচ