সরকার অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেবে। এছাড়া বঞ্চিত যারা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির পর অল্প সময়ের মধ্যে অবসরে যাবেন তাদের গ্রেড-১ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে পদায়নের জন্য নতুন করে ফিটলিস্ট করা হচ্ছে।
Advertisement
রোববার (২৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিসিএস নিয়োগের বিষয়ে আমাদের কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাদের নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব যোগদান করেছেন। এসএসবি ফরমেশন হয়েছে। উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দ্রুত সময়ে শুরু হবে। যেহেতু অনেকের পদোন্নতি দেওয়ার জন্য পদ দেওয়া যায়নি। কিন্তু ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি বাদ পড়া আরেকটা বিষয়। যুগ্ম সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব আরেকটা।’
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অনেক বিতর্ক অনেক দিন হয়েছে, নতুন ডিসি ফিটলিস্ট করার কাজটা শুরু হবে। এই কাজটা যে রকম গতবার দিনে রাতে করতে হয়েছে। মাঠ কিন্তু অনেক ভালো। তারপরও সরকারের সিদ্ধান্ত আমরা নতুন ডিসি দেওয়ার চেষ্টা করবো। এ কাজটা এসএসবির মাধ্যমে শিগগরি শুরু হবে।'
Advertisement
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান
মোখলেস উর রহমান বলেন, বঞ্চিত যারা অতিরিক্ত সচিব, পদোন্নতি পেয়েছেন ১৩ দিনে তিন পদোন্নতি। এটা বিষয় নয়। তারা সারা বছরই বঞ্চিত ছিলেন। এই বঞ্চিত যারা অতিরিক্ত সচিব হয়ে চাকরির শেষ প্রান্তে, সিদ্ধান্ত হয়েছে গ্রেড-১ দিয়ে তাদের পদোন্নতি দেব। অনেকের এক মাস আছে, ১৫ দিন আছে, ২০ দিন আছে। এটা আমি মনে করি অনেকের পদোন্নতি হবে এবং সামাজিক, পারিবারিক, আর্থিকভাবে তারা উপকৃত হবেন। এটার জন্য তারা চাকরি করেন। দাবি করার আগেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বঞ্চিত যারা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন সবাইকে কি গ্রেড-১ দিতে পারবেন- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি যারা চাকরি করি বিধি-বিধানের মাধ্যমে করতে হয়। যদি ডিসিপ্লিনারি মামলা থাকে, ফৌজদারি মামলা থাকে, যদি কারও বিরুদ্ধে...যেমন এক কলিগের বিরুদ্ধে আরেক কলিগের মোটরসাইকেল চুরির মামলা; মানে মামলা-মোকদ্দমা-অভিযোগ-তদন্ত যদি থাকে এদের বিবেচনায় আনা হবে না। তাদের গ্রেড-১ দেওয়া হবে না।’
অন্য ক্যাডারের পদোন্নতি বিধি মোতাবেক শুরু হবে জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আর নতুন করে দল বেঁধে দাবি করার কিছু নেই। যে বিষয়গুলো চিহ্নিত সে বিষয়গুলো সরকার বিধি মোতাবেক যার যতটুকু প্রাপ্য সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।
Advertisement
বিসিএসে কোটা পদ্ধতি কীভাবে প্রয়োগ হবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ৭ শতাংশ অন্যান্য এবং ৯৩ শতাংশ মেধা, সেভাবে হবে।
নিজের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে যা জানালেন সচিব
ডিসি নিয়োগে বিপুল অর্থের লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে জনপ্রশাসন সচিবের বিরুদ্ধে। পরে সেটা তদন্তের দায়িত্ব তিনজন উপদেষ্টাকে দেওয়া হয়। তদন্তে কি উঠে এসেছিল- জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘আমি প্রথম কথা দিয়ে বলি, ভালোবাসা দিয়ে বিশ্ব জয় করা যায়। আমি এটাকে পজিটিভলি নিয়েছি। যে পত্রিকা বা মিডিয়া যেটা প্রচার করেছে, হয়তো তারা না বুঝে বা ভুল বুঝে করেছে, এখন তারা রিয়ালাইজ করে যে ইট ওয়াজ রং। এর বেশি আমি বলবো না।’
তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, এটার জন্য আমাকে তিনজন হাই পাওয়ার উপদেষ্টার তদন্ত ফেস করতে হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটা তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছিল। অন্য সংস্থা তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছিল। সেটি প্রসেস হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে গেছে, এখানে কমেন্ট হলো- এটা একটা ভুয়া, বানোয়াট, মিথ্যা রিপোর্ট করা হয়েছে।
‘এখানে আরও একটু যোগ করি। এটা মোখলেস উর রহমান তাদের টার্গেট ছিল না, তাদের টার্গেট ছিল জনপ্রশাসন সচিব। তাদের আরও টার্গেট ছিল ন্যাশনাল অথবা ইন্টারন্যাশনাল হোয়াট এভার ইট ইজ- যদি এই পদটা ভালনারেবল করতে পারি তবে একটা একটা করে সরকারের, আমরা যদি ক্রিকেটের ভাষায় বলি- স্টাম্প পড়ে যাবে। দ্যাট ওয়াজ দ্য পালস।’
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আলটিমেটলি যেহেতু আমি সারা জীবন একইভাবে জীবনযাপন করেছি। এখনও করি। আমি পজিটিভ লোক। আমি যেহেতু জনপ্রশাসনের সচিব মানে এই মিনিস্ট্রির মাধ্যমে অন্য সব মিনিস্ট্রির অভিভাবক বলা হয়, আমার মাধ্যমে কোনো কিছু নেগেটিভ অথবা আমার মাধ্যমে কোনো কিছু পাওয়া না হোক, এটা ঘটবে না ইনশাআল্লাহ।’
আরএমএম/জেএইচ