তোমরা সবাই বড় হও। নানান দিকে বিকশিত হও, চারিদিকে তোমাদের আলোর ঝরনাধারা ছড়িয়ে পড়ুক। জীবনকে মূল্যবান ভেবো। প্রতিটা মিনিট এই পৃথিবীকে উপহার দাও। বড় কিছু দিয়ে, সুন্দর কিছু দিয়ে।
Advertisement
কথাগুলো বলেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আলোর ইশকুলের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র উচ্চতর পাঠচক্র-১৯ কার্যক্রমের পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি। এ উপলক্ষে বিশেষ স্মরণিকা প্রকাশিত হয়।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
Advertisement
পাঠচক্র সদস্যদের স্মৃতিচারণ, কবিতা পাঠ, গান, নাচ, পুঁথিপাঠ, নাটিকাসহ নানান আয়োজনে বর্ণিল হয়ে ওঠে পাঁচ বছর পূর্তি উৎসব। এই উদযাপন স্মরণীয় করে রাখতে প্রকাশিত হয় ‘স্মৃতি ও সৃজন’ নামের বিশেষ স্মরণিকা। সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন রুখসানা মিলি, প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করেন মুহিব নেসার। এ উৎসবের আহ্বায়ক ছিলেন মো. সাকিব চৌধুরী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন অদ্রিকা এষণা পূর্বাশা।
২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর ফ্রানজ্ কাফকার বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস মেটামরফোসিস পাঠের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এই বিশেষায়িত পাঠচক্র। পাঁচ বছরের পরিক্রমায় বাংলা সাহিত্য ও বিশ্বসাহিত্যের দেড়শর বেশি বই দলগতভাবে পাঠ ও আলোচনা করা হয় এই পাঠচক্রে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লিও তলস্তয়, জ্যঁ পল সার্ত্র, জ্যাক লন্ডন, ম্যাক্সিম গোর্কি, হেনরিক ইবসেন, জ্যঁ জিরাদু, নিকোলাই গোগল, ক্লাইভ বেল, আন্তন শেখভ, ফিওদর দস্তয়ভস্কি, জর্জ বার্নাড শ, ইউজিন ও নীল, ভলতেয়ার, লর্ড মেকলে, জোনাথন সুইফট, ইউভাল নোয়াহ হারারি, আলবেয়ার কাম্যু ও মিগেল দে সেরভানতেসের মতো বিশ্বনন্দিত সাহিত্যিক ও চিন্তকদের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলো ছিল এই পাঠচক্রের পাঠ্য তালিকায়। চিরন্তর ও সমকালীন বাংলা সাহিত্য থেকে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রমথ চৌধুরী, জসীম উদদীন, বেগম রোকেয়া, নিরঞ্জন মজুমদার, অন্নদাশংকর রায়, মৈত্রেয়ী দেবী, জাহানারা ইমাম, সরদার ফজলুল করিম, আহমদ ছফা, শংকর, প্রবোধকুমার সান্যাল, সাগরময় ঘোষ রচিত নির্বাচিত বইও পড়েছেন পাঠচক্রের সদস্যরা।
নিয়মিত বই পড়ার পাশাপাশি এই পাঠচক্রের সদস্যরা একসঙ্গে ভ্রমণ, মঞ্চ নাটক দেখা,গাছ-ফুল-নিসর্গ পরিচিতি, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী, বিভিন্ন প্রতিবাদে অংশগ্রহণও করেন। সমাজের যেখানে যার অবস্থান সেখান থেকেই নিজেদের আরও একটু উন্নততর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে পাঠচক্রের সদস্যদের একত্রিত পথচলা।
Advertisement
এমএমএআর/এএসএম