ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বিরুদ্ধে বুধবার ঘুস ও জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন মার্কিন প্রসিকিউটরেরা। ফলে তাকে এখন দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।
Advertisement
আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, ভারতের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির জন্য ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঘুস দিয়েছেন।
বলা হচ্ছে, আদানি ঘুসের সাহায্যে এই প্রকল্প পাওয়ার বিষয়টি গোপন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মার্কিন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
তবে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন' বলেছে। তারা একটি ‘আইন মেনে চলা কোম্পানি' বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
Advertisement
জানা গেছে, আদানিকে বিচারের মুখোমুখি করতে চাইলে মার্কিন প্রসিকিউটরদের যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ভারতের কাছে চাইতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র আদানিকে চাওয়ার আবেদন করলে ভারতের আদালত সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। যেমন, আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি ভারতেও অপরাধ কিনা, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিনা বা যুক্তরাষ্ট্রে আদানির অমানবিক আচরণের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা।
আদানি এই প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে লড়তে পারেন। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কত সময় লাগবে তা স্পষ্ট নয়। আদানির বিরুদ্ধে ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুস দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে, তাই প্রত্যর্পণের বিষয়টির রাজনৈতিক দিকও রয়েছে।
আদানি কি আদালতে অভিযোগ খণ্ডন করতে পারবেন? হ্যাঁ, তবে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে তার হাজির হওয়ার আগ পর্যন্ত তার আইনজীবীরা একটি বিষয় চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। সেটি হচ্ছে, তারা যুক্তি দিতে পারেন, আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার এখতিয়ার মার্কিন প্রসিকিউটরদের নেই।
Advertisement
আর আদানি মার্কিন বিচারকের সামনে হাজির হলে তার আইনজীবীরা বলতে পারেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে আইনগত ঘাটতি আছে বা এর পক্ষে তথ্যপ্রমাণ নেই।
অভিযোগ দাখিলের সময় মার্কিন প্রসিকিউটরেরা ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক ও মোবাইল ফোন ও মেসেজিং অ্যাপ রেকর্ড উপস্থাপন করেছেন।
আদানি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কিছু অংশ স্বীকার করে প্রসিকিউটরদের কাছে শাস্তির পরিমাণ কমাতে আবেদনও করতে পারেন। যদিও প্রসিকিউটরেরা এমন আলোচনায় ঢুকতে বাধ্য নন। এছাড়া এধরনের কোনো চুক্তি হলে সেটি একজন বিচারক দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে।
আদানিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যর্পণ করা হলে বা তিনি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে আত্মসমর্পণ করলেও বিচার শুরু হতে অনেক দেরি হতে পারে।
অভিযোগ প্রমাণ হলে আদানির কয়েক দশকের জেল হতে পারে, সঙ্গে আর্থিক জরিমানাও হতে পারে। তবে বিষয়টি বিচারকের ওপর নির্ভর করে।
আদানিকে অভিযুক্ত করতে হলে ১২ জনের একটি জুরিকে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিতে হবে। এছাড়া আদানি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
এমএসএম