ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার, অটোটেম্পু, অটোরিকশাচালক শ্রমিক ইউনিয়ন শ্রম আইন ও সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন করে সারাদেশের জন্য একক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারসমূহ সবার জন্য নিশ্চিত করার দাবিতে সমাবেশ করা হয়েছে।
Advertisement
একইসঙ্গে শ্রমিকরা প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাসচালক, রাইডার, ই-প্ল্যাটফর্ম কর্মীসহ সব শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের নিয়োগপত্র, কর্মঘণ্টা, চাকরির নিরাপত্তা, ন্যায্যমজুরি, অতিরিক্ত কাজের মজুরি, চাকরির অবসানে ক্ষতিপূরণ, উৎসব ভাতা, ছুটি, দুর্ঘটনায় আজীবন আয়ের মানদণ্ডে ক্ষতিপূরণ, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার বাস্তবায়নের দাবি করেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মূল ফটকে আয়োজিত এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়েছে। সমাবেশ শেষে তারা শ্রম উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবেন বলেও জানিয়েছেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি বিরেশ চন্দ্র দাশ এবং পরিচালনা করেন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল।
Advertisement
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমজীবী মানুষকে বঞ্চিত করে, তাদের জীবনকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখে জুলাই আন্দোলনের চেতনায় বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়া সম্ভব হবে না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে বিজয়ের প্রান্তে পৌঁছানোর অন্যতম অংশীদার প্রাইভেট গাড়িরচালক, রাইডার, ই-প্ল্যাটফর্মের কর্মীসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ।
বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) গভর্নিং বডির সভায় সরকার আগামী মার্চ মাসের মধ্যে শ্রম আইন-২০০৬ সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে। এই সংশোধনী যেন ২০১৩ বা ২০১৮ এর মতো প্রতারণামূলক না হয় যা শ্রম অধিকারের সুরক্ষার পরিবর্তে শ্রমিকদের অধিকারকে সংকুচিত করে। বিদ্যমান শ্রম আইনকে আইএলও এর মৌলিক কনভেনশনসমূহ এবং আইএলও কনভেনশন ১০২, ১২১, ১৩১, ১৮৯ ও ১৯০ এর আলোকে এমনভাবে সংশোধন করতে হবে যেন ব্যক্তিগত গাড়ির চালক, রাইডার, ই-প্ল্যাটফর্ম কর্মীসহ সব শ্রমিকের অধিকারের সুরক্ষা একই আইনের অধীনে নিশ্চিত করা যায়।
তারা বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে ভয় দেখানোর চেয়ে গাড়ি চালকদের শারীরিক ও মানসিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া দরকার। সেজন্য সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর অপব্যবহার করে জরিমানা ব্যবসা ও দুর্নীতির সুযোগ বন্ধ করার পাশাপাশি গাড়ি চালকদের চাকরির শর্তাবলি ও সামাজিক সুরক্ষা উন্নত করার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সামাজিক মর্যদা ও দায়িত্বশীলতার চেতনা গড়ে তোলার জন্য সমআচরণের পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বক্তারা বলেন, গাড়ি চালকদের শান্তিপূর্ণভাবে উত্থাপিত দাবিসমূহ বিবেচনায় নিয়ে শ্রম আইন এবং সড়ক পরিবহন আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও যথার্থ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করবেন। অন্যথায় গাড়িচালকের মানবিক জীবনের দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো।
Advertisement
সমাবেশে বক্তব্য দেন, ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মোহাম্মদ শাহাজালাল, যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, সহ-সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল মিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ গেসেন, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান সবুজ, সহ-প্রচার সম্পাদক দুলাল হাওলাদার, ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ শফিক, বাড্ডা উপ-কমিটির সভাপতি গোলাম রহমান।
এসআরএস/এমআরএম/এমএস