বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হয়ে সম্প্রতি মারা যাওয়া আব্দুল্লাহর কবর জিয়ারত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। এসময় তিনি শহীদ আব্দুল্লাহর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
Advertisement
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে আব্দুল্লাহর বাড়িতে পৌঁছান উপদেষ্টা হাসান আরিফ।
এসময় উপদেষ্টা বলেন, আব্দুল্লাহর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বেগবান হয়েছে। তার পরিবারের জন্য যা প্রয়োজন সরকার তা করবে।
উপদেষ্টা সেখানে পৌঁছানোর পর আব্দুল্লাহর মা মাবিয়া খাতুন, বাবা আব্দুল জব্বার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা সন্তান হত্যার বিচার চান।
Advertisement
মা মাবিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলেকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। যারা গুলি করেছে ও নির্দেশ দিয়েছে দ্রুত তাদের বিচার করতে হবে। তবেই আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান, শার্শা থানার নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান, এসিল্যান্ড নুসরাত ইয়াসিন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য আজিজুর রহমানসহ আব্দুল্লাহর স্বজনরা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ পুলিশের গুলিতে আহত হন। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তার কপালের ঠিক মাঝ বরাবর গুলি লাগে। এ অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে ছিলেন।
খবর পেয়ে বন্ধুরা প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে অস্ত্রোপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। তবে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর তাকে বেনাপোলে নিয়ে আসেন স্বজনরা। বাড়িতে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আরও অবনতি হওয়ায় দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
Advertisement
১২ আগস্ট সকাল ৭টায় তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান, যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। ফের অস্ত্রোপচার করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২২ আগস্ট সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয় তাকে। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান তিনি।
জামাল হোসেন/এসআর/জিকেএস