লালমনিরহাটের পাটগ্রামে চুরির অভিযোগে অটোরিকশার চালক হাসানুর রহমানের (২৯) পায়ে রশি বেঁধে ঝুলিয়ে মারপিটে তার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে পাটগ্রাম পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের মির্জারকোর্টের নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার (১১ নভেম্বর) পাটগ্রাম ঠাকুরবাড়িতে ব্যাটারি চুরির ঘটনায় তাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়।
নিহত হাসানুর পাটগ্রাম পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জারকোট এলাকার মৃত আশরাফ আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা ও নিহতের স্বজনেরা জানান, গত ১১ নভেম্বর বিকেলে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউনুস আলীর একটি আইপিএসের ব্যাটারি হাসানুরের অটোরিকশায় পান স্থানীয়রা। এতে ব্যাটারি চুরির অভিযোগে তাকে আটক করে বেধড়ক মারপিট করেন ইউনুস আলীর ছেলে ও স্বজনরা। খবর পেয়ে হাসানুরের স্ত্রী বিলকিস বেগম (২৫) স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসানুরকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান তার স্ত্রী। পাঁচ দিন পর আহত হাসানুর মারা যান।
Advertisement
এ ঘটনায় শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে মৃত হাসানুরের প্রতিবেশীরা ইউনুস আলীর বাসা ও তার ছেলেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় দোকান বন্ধ করে সরে পড়েন অভিযুক্তরা।
হাসানুরের ছোট ভাই আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাই ঠাকুরবাড়িতে ভাড়া নিয়ে যায়। কে বা কারা তার রিকশায় ব্যাটারি উঠিয়ে দেয়। এতে ব্যাটারি চুরির সন্দেহে কাদের ও তার ভাই (ইউনুসের ছেলে) এবং স্থানীয় লোকজন ধরে পায়ে রশি বেঁধে ঝুলিয়ে তাকে মারধর করেছে।’
হাসানুরের বোন আদুরি আক্তার বলেন, আমরা গরীব মানুষ, আমাদের বিচার নেই। আমার ভাইকে মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। দেশে কি কোনো আইন নেই? আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।
এ ঘটনায় ইউনুস আলী ভাটিয়ার ছেলে সুরুজ্জামান বলেন, ৫ দিন আগে সে (হাসানুর) ব্যাটারি চুরি করেছে, আমার ভাইরা দুই একটি চড় থাপ্পড় দিয়েছে। এরপর সে বাড়িতে গিয়ে ৫ দিন পর মারা গেলো। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
Advertisement
পাটগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ব্যাটারি চুরির ঘটনাটি আমরা শুনেছি। এরপর ওই চালকের মৃত্যুর বিষয়ে ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রবিউল হাসান/এফএ/জেআইএম