পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর কাকরাইল মারকাজ মসজিদ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন তাবলিগ জামাতের দিল্লির নিজামুদ্দীনের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।
Advertisement
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৮টার পর সাদপন্থিদের একটি বিশাল জমায়েত মসজিদে প্রবেশ করে। দুপুরে মসজিদের সামনের ও আশপাশের সড়কে সাদপন্থিদের বিপুল উপস্থিতি চোখে পড়ে। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাকরাইল মসজিদের সামনে থেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ভিআইপি সড়কসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় রাস্তায় বসে অবস্থান নিয়েছেন মাওলানা সাদের অনুসারীরা। তারা কাকরাইলের আইডিবি ভবন ছাড়িয়ে নয়াপল্টন পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছেন।
আরও পড়ুন সাদপন্থিদের সুযোগ দিলে ঢাকা অচলের হুঁশিয়ারি ইজতেমায় মাওলানা সাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবিযাদের দাওয়াতি কার্যক্রম নেই তারা জুমার নামাজ পড়ে সেখান থেকে চলে যেতে শুরু করেন। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নামাজ শুরু হয় মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় ১২টা ৫০ মিনিটে। মোনাজাতে মাওলানা সাদকে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে সব ধরনের সহায়তা চাওয়া হয়।
Advertisement
জানা যায়, শুক্রবার সকালে কাকরাইল মসজিদ ছাড়ার কথা থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই তাবলিগের মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের বেশিরভাগ অনুসারী মসজিদ ছেড়ে যান।
কাকরাইল মসজিদের দখল ঘিরে সম্প্রতি সাদপন্থিদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেন জুবায়েরপন্থিরা। দীর্ঘদিন ধরে তাবলিগ জামাতের দুপক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে ফের উত্তেজনা বিরাজ করছে। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ নিয়েও দুপক্ষের বিরোধ বাড়ছে।
২০১৯ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্বে জুবায়েরপন্থিরা এবং দ্বিতীয় পর্বে সাদের অনুসারীরা অংশ নেন। এবার মাওলানা সাদের অনুসারীরা দাবি করছেন, তারা প্রথম পর্বে ইজতেমা করতে চান। তবে জুবায়েরপন্থিরা ঘোষণা দিয়েছেন, সাদপন্থিদের ইজতেমার মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
শুক্রবার এক পক্ষ অন্য পক্ষকে হটিয়ে কাকরাইলের মারকাজ মসজিদ দখলে নিতে পারে, এমন উত্তেজনায় কাকরাইল এলাকায় ভোর থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাদপন্থিদের ব্যাপক সমাগমে কাকরাইল মসজিদের আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে।
Advertisement
২০১৭ সালের নভেম্বরে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ নেয়। সেসময় কাকরাইলে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। চরম বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদের এক অংশে জুবায়েরপন্থিরা চার সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা দুই দফায় আয়োজিত হবে। প্রথম দফার ইজতেমা শুরু হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফায় শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।
তবে গত কয়েকদিন ধরেই কাকরাইল মসজিদ ও ইজতেমা ময়দান দখল ঘিরে তাবলিগ জামাতের দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। উভয়পক্ষই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে। এরই মধ্যে সাদপন্থিরা ঘোষণা দেন, শুক্রবার কাকরাইল মসজিদে তাদের অবস্থানে কেউ বাধা দিলে এবং কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করা হলে, এর দায়ভার নিতে হবে জুবায়েরপন্থিদের।
এসএম/এমকেআর/জেআইএম