বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়ি গেছেন নৌ-পরিবহন ও শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বেনাপোল স্থলবন্দরে নির্মিত কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে আব্দুল্লাহর মৃত্যুর খবর পান তিনি।
এরপর তিনি বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া গ্রামে আব্দুল্লাহর বাড়ি যান। এসময় তার মামা ইসরাইল সর্দার ও বড় দুই ভাই উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সান্ত্বনা দেন। সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন। আব্দুল্লাহকে যেখানে দাফন করা হবে সেই কবরস্থানও ঘুরে দেখেন তিনি।
আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ (২৩) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মৃত্যু হয় তার।
Advertisement
আব্দুল্লাহ বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া টার্মিনাল পাড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জব্বারের ছেলে। মা মাবিয়া বেগম। তারা তিন ভাই ও এক বোন। আব্দুল্লাহ ছিল সবার ছোট। তিনি ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন। রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন আবদুল্লাহ।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতিবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। তার কপালের ঠিক মাঝ বরাবর গুলি লাগে। এমন অবস্থায় প্রায় দু-তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে ছিলেন।
দীর্ঘ সময় রাস্তায় পড়ে থাকার পর প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করে তার মাথা থেকে বের করা হয় গুলি। তবে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
এরপর তাকে বেনাপোলে নিয়ে যান স্বজনরা। বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ডাক্তাররা দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
Advertisement
চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান, যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার বাড়ি বড়আঁচড়াসহ গোটা বেনাপোলে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে তার মরদেহ আসবে বাড়ি। শুক্রবার জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হবে মরদেহ।
মো. জামাল হোসেন/জেডএইচ/জিকেএস