বিশ্বজুড়েই ডায়বেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫৩ কোটি, যা ২০৩০ সালে ৬৪ কোটিতে পৌঁছাবে।
Advertisement
জানলে অবাক হবেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ।
ডায়াবেটিস কী ও কেন হয়?ডায়াবেটিস এক ধরনের মেটাবলিক ডিজঅর্ডার। এক্ষেত্রে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন ও তা ব্যবহার করতে পারে না। অনেকের ক্ষেত্রে ইনসুলিন একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।
যে কোনো খাবার খাওয়া পর আমাদের শরীর সেই খাদ্যের শর্করাকে ভেঙে চিনিতে (গ্লুকোজ) রুপান্তরিত করে। অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামের যে হরমোন নিসৃত হয়, তা শরীরের কোষগুলোকে নির্দেশ দেয় চিনিকে গ্রহণ করার জন্যে।
Advertisement
এই চিনি কাজ করে শরীরের জ্বালানি বা শক্তি হিসেবে। শরীরে যখন ইনসুলিন তৈরি হতে না পারে অথবা এটা ঠিক মতো কাজ না করে তখনই ডায়াবেটিস হয়। এর ফলে রক্তের মধ্যে চিনি জমা হতে শুরু করে।
ডায়াবেটিস মূলত ৪ ধরনের হয়- টাইপ-১, টাইপ-২, জেস্টেশনাল ও অন্যান্য। টাইপ-১ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের শরীরের সব ইনসুলিন নষ্ট হয়ে যায়। তাদের যদি আলাদা করে ইনসুলিন দেওয়া না হয়, তাহলে তারা মৃত্যুবরণও করতে পারেন। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ১০ শতাংশ এই টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত।
আরও পড়ুন যেসব চা পানে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে সাধারণ ঠান্ডা-কাশি নাকি নিউমোনিয়া?অন্যদিকে যাদের শরীরে ইনসুলিন আছে, কিন্তু সেটা কাজ করতে পারছে না। তখন আমরা যে খাবারই খাই, সেটা গ্লুকোজ হিসেবে শরীরে জমে যায়। এটেই হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। যে কোনো ব্যক্তিই এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। শরীর যখন রক্তের সব চিনিকে (গ্লুকোজ) ভাঙতে ব্যর্থ হয়, তখনই ডায়াবেটিস হয়।
এই জটিলতার কারণে মানুষের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়া ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিডনি ও অনেক সময় শরীরের নিম্নাঙ্গ কেটেও ফেলতে হতে পারে।
Advertisement
১. ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা২. দুর্বল বোধ ও মাথা ঘোরা৩. ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া৪. খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া৫. মিষ্টি খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়া৬. ওজন কমে যাওয়া৭. শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া সহজে না সারা৮. চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানিভাব৯. চোখে কম দেখতে শুরু করা ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে। এ জন্য সবসময় হাসপাতালে যেতে হবে এমন নয়।
এখন অনেক ফার্মেসিতে স্বল্পমূল্যে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায়। সেখান ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সূত্র: লগইনটুহেলথ/বিবিসি
জেএমএস/জিকেএস