চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে অপারেশন ঈগল হান্টের নামে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে আবুল কালাম আজাদ ওরফে আবু মরিচকে হত্যার অভিযোগে পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি), উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি), সংসদ সদস্যসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন নিহতের স্ত্রী।
Advertisement
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শিবগঞ্জ থানায় নিহতের স্ত্রী মোসা. সুমাইয়া খাতুনের (৩০) পক্ষে মামলাটি দাখিল করেন তার ভাই সানাউল্লাহ সুলভ।
মামলার আবেদনে প্রধান আসামি করা হয়েছে অপারেশন ঈগল হান্টের আভিযানিক দলের উপ-পরিদর্শক সাব্বির আলম চৌধুরীকে। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল আলম, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, রাজশাহী রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি এম খুরশিদ হোসেন, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানীসহ ১৮ জন।
মামলার আবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল গভীর রাতে পুলিশ, র্যাব, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও সোয়াট টিমের যৌথবাহিনীর দল উপজেলার ত্রীমোহনী এলাকার মসলা ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদের (আবু মরিচ) বাড়ি ঘেরাও করে গোলাগুলি শুরু করে।
Advertisement
বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় আবু মরিচের বাড়ির মূল ফটক। এসময় বাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও বের হতে পারেননি তিনি, তার স্ত্রী ও এক সন্তান । কিছুক্ষণ পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় পুরো বাড়ি। খাবার না পেয়ে বাইরে বের হতে না পেরে ভয়ে কাতর হয়ে যান তারা।
পরের দিন (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে ফের শুরু হয় গুলির শব্দ। স্বামী ও তিন বছরের শিশু সন্তান সাজিদা ক্ষুধায় নিস্তেজ হয়ে যায়।
মামলার নথিতে আবু মরিচের স্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ২৭ এপ্রিল ফজরের নামাজের সময় উঠে নামাজ আদায় করি। তখনো গুলির শব্দ শুনতে পাই। এভাবে সারাদিন কেটে যায়। আসরের নামাজের পর আমার বাসার গেট ভেঙে কয়েকজন পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়িতে প্রবেশ করে। আমার স্বামী আবুল কালাম আজাদের বুকের ওপরে পা রেখে হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করে। সেখানেই মৃত্যু নিশ্চিত করে আমার স্বামীর। এসময় আমার পায়ে গুলি করা হয়।
মামলার আবেদনকারী সুমাইয়ার ভাই সানাউল্লাহ সুলভ দাবি করেন, তার ভগ্নিপতি বিএনপির কট্টর সমর্থক। এজন্য তাকে হত্যার পর মরদেহে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
Advertisement
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, মামলার এজাহার পেয়েছি। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মামলা গ্রহণসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোহান মাহমুদ/এমএইচআর/এমএমএআর