ধর্ম

কবরে কেবলামুখী না হওয়া কি ঈমানহীন মৃত্যুর আলামত?

মৃত ব্যক্তিকে কবরে ডান কাতে কিবলামুখী করে শোয়ানো সুন্নত। অর্থাৎ মৃতের বুক ও চেহারাসহ পুরো শরীরই কিবলামুখী করে শোয়াতে হবে। কবর এমনভাবে খনন করতে যেন মৃতের শরীর কিবলামুখী হয়ে থাকে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, কাবা জীবিত ও মৃত অবস্থায় ‍মুসলমানদের কিবলা। (সুনানে আবু দাউদ: ২৮৬৫)

Advertisement

আমাদের দেশে অজ্ঞতাবশত অনেকে মৃতব্যক্তিকে কবরে চিত করে শোয়ানোর পর চেহারা কেবলামুখী করে দেওয়া যথেষ্ট মনে করেন। এটা ঠিক নয়। বরং মৃতকে পরিপূর্ণভাবে কিবলামুখী করে শোয়াতে হবে।

মৃত ব্যক্তিকে সুন্নত অনুসরণ করে কিবলামুখী করে শোয়ানো তাকে যারা কবর দেবে, তাদের দায়িত্ব। যথাযথভাবে কিবলামুখী না করা হলে সেটা জীবিতদেরই ভুল বা ব্যর্থতা। মৃতের এখানে কোনো গুনাহ বা দায় নেই।

আমাদের দেশে অনেক এলাকায় এ কথা প্রচলিত আছে যে, মৃত ব্যক্তিকে যদি কবরে কেবলার দিক ছাড়া অন্যদিকে মুখ করে শোয়ানো হয়, এটা তার ঈমানবিহীন মৃত্যুর আলামত। এ কথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া কথা।

Advertisement

কোনো মৃতের যদি সুন্নত নিয়মে দাফন না হয় তাহলে কাজটি ঠিক না হলেও এটাকে কোনোভাবেই ঈমানবিহীন মৃত্যুর আলামত বলা যাবে না।

দাফন সংশ্লিষ্ট দুটি মুস্তাহাব আমল

মৃত ব্যক্তিকে কবরে শোওয়ানোর পর উপস্থিত ব্যক্তিদের জন্য মৃত ব্যক্তির মাথার দিক থেকে উভয় হাত দিয়ে তিনবার মাটি দেওয়া মুস্তাহাব। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক জানাজার নামায আদায় করেন। এরপর মৃতের কবরের কাছে আসেন এবং তার মাথার দিকে তিনবার মাটি দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৫৬৫)

মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার তার কবরের পাশে কিছুক্ষণ অবস্থান করে তার জন্য রহমত ও মাগফেরাত প্রার্থনা করা, ফেরেশতাদের প্রশ্নের জবাবে তার ইমানি দৃঢ়তা প্রার্থনা করাও মুস্তাহাব। রাসুল (সা.) এ রকম আমল করেছেন বলে বর্ণিত রয়েছে। ওসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর সেখানে অবস্থান করতেন এবং বলতেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। তার জন্য দৃঢ়তার দোয়া করো। এখনই তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ৩২১৩)

ওএফএফ/জিকেএস

Advertisement