গ্রীষ্মের দাবদাহ থামছেই না। এরই মধ্যে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টির দেখা নেই। আবহাওয়াবিদরাও কোনো সুখবর দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ফিরে আসছে লোডশেডিং। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গরমে অতিষ্ঠ কর্মজীবী মানুষ রাস্তার পাশে অবস্থিত দোকান থেকে দূষিত পানি ও শরবত খেয়ে নানা রকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু কিশোররা ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া আমাশয়, পেটের পীড়া, টাইফয়েড, জন্ডিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষজন। এ অবস্থায় বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, রোগাক্রান্তদের স্যালাইন সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গরমে লোডশেডিং যেন বাড়তি কষ্টের কারণ না হয় সেজন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করাটাও জরুরি। সহযোগী একটি দৈনিকের এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে, ভ্যাপসা গরমে, ঘামে অসহনীয় অবস্থা বিরাজ করছে সর্বত্র। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে তাপপ্রবাহের ফলে এহেন অস্বস্তির উন্নতির কোন পূর্বাভাস নেই। গতকাল বুধবার পর্যন্ত সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস উঁচুতে রয়েছে। স্থানভেদে তাপমাত্রা ৪/৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বেশি। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৯.৬ ডিগ্রি সে.। এ সময় ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৩৬.৮ ও ২৮.২, চট্টগ্রামে ৩৩.৮ ও ২৭.৫, সিলেটে ৩২.৪ ও ২৩.২, রাজশাহীতে ৩৯.৪ ও ২৭.৯, খুলনায় ৩৬.৫ ও ২৮.২, বরিশালে ৩৫.৮ ও ২৭.৬ ডিগ্রি সে.।তীব্র তাপদাহের কারণে দিনে ও রাতে ভ্যাপসা গরম অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া বাতাসের আপেক্ষিক জলীয়বাষ্প ও আর্দ্রতার মাত্রা (সারাদেশে গড়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি) অত্যধিক থাকায় মানুষ অতিরিক্ত ঘামাচ্ছে। সেই সাথে শরীর দ্রুত দুর্বল ও কাহিল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের কষ্ট-দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। গরমের তীব্রতার কারণে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিও রয়েছে। অন্যদিকে তীব্র গরমে পরীক্ষা দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। পরীক্ষা কেন্দ্রে জ্ঞান হারাচ্ছে, বমি করছে, সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীরা। এজন্য গ্রীষ্ককালের ছুটি এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। একাডেমিক কেলেন্ডার অনুযায়ী মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আগামী ১৪ মে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালের ছুটি হবে, শেষ হবে ২৬ পর্যন্ত। এছাড়া লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটও গরমে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। এ অবস্থায় জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার জন্য যা কিছু করণীয় আছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা করতে হবে। এছাড়া প্রকৃতির এই বৈরী আচরণ থেকে কিভাবে রক্ষা পাওয়া যায় এ নিয়ে পরিবেশবিদসহ সংশ্লিষ্টদেরও সক্রিয়ভাবে ভাবতে হবে। নিতে হবে সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ।এইচআর/আরআইপি
Advertisement