সাহিত্য

বলতে এসো না ভালোবাসি এবং চিঠি দিও

বলতে এসো না ভালোবাসি

Advertisement

কখনো বলতে এসো না ‘তোমাকে ভালোবাসি’। কংক্রিটের দুনিয়ায় তীব্র অনীহা নিয়েদূর শুকতারার পানে একবুক কোমল ভালোবাসার বুভুক্ষিত প্রতীক্ষা নিয়ে তাকিয়ে থাকলেতখন খোলা চুলে কিছুক্ষণ বসো আমার পাশে।না! কোনো সান্ত্বনা নয়,বরং আদরের চাদরে জড়িয়ে বলে দিও—‘আমার কাছে তামাম দুনিয়ার কোনো কিছুইআপনার জীবনের চেয়ে দামি নয়।’

মন খারাপের দেশে যখন অকারণেই মন খারাপ হয়তখন তুমি প্রণয়ের আহ্লাদি বাতাস হও,চুলে আঙুল ডুবিয়েউড়িয়ে দাও দীর্ঘশ্বাস নামক কার্বন-ডাই-অক্সাইড।আমার অশান্ত হৃদয়ে গড়ে তোলো শান্তি নিকেতন,প্রেম-পূর্ণতার পরশ মেখে জানিয়ে দিও—‘আসমান জমিনের কোনো কিছুতেই আপনি ছাড়া আমি পূর্ণ নই।’

কোনো অভিযোগের অভিলাষ না রেখেইতুমি না হয় আমার দুঃখ-অভিসার হও, দায়িত্ব নাও আমার বাউণ্ডুলেপনারআমার উড়নচণ্ডি স্বভাবেরবিরতিহীন ভালোবাসার অভাবের।না! না! নিঃস্বার্থে নয়, সেখানে স্বার্থ থাকুকভালোবাসা বিনিময়াদি-স্বার্থ।

Advertisement

বলা না বলার মাঝে ভালোবাসা থাকে না।তুমি কি জানো না, ভালোবাসা থাকে অনুভবে, পারস্পারিক আবেগে দায়িত্বে, মমতায় কিংবা যতনে!

****

চিঠি দিও

একদিন চলে যাবো শরৎবাবুর ‘দেবদাস’র মতো;রবিঠাকুরের ‘কৃষ্ণকলি’কে ছেড়ে জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি নদীটি রেখে।আমি চলে যাবোইমতিয়াজ মাহমুদের গাঢ় অভিমান বুক পকেটে নিয়ে জসিম উদদীনের ‘কবর’ কবিতার মাটির দিকে,যে ঘরে অনায়াসেই প্রবেশাধিকার পাবেহুমায়ূনের ‘কুটু মিয়ার’ কবরের মতো বৃষ্টি-জল।

Advertisement

সেদিন রুদ্রের আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখার জন্যরেখে যাবো না একটি শব্দও,আবেগী কণ্ঠে ডাকবো না আর বনলতা সেন।মানিকবাবুর কুবের মাঝিসেদিন বাঁধনছেড়া হবে তোমাকে রেখেই।

সুনীলের একশ আটটা নীলপদ্মের বদলেতোমার তরে রেখে যাবো হেলাল হাফিজের দুঃখ,শামসুর রাহমানের ‘হৃদয় নিঃসঙ্গ চিল’র মতোতোমাকেও উপহার দেবো এক আকাশ নিঃসঙ্গতা।সেলিনার ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ ভেঙে জহিরের ‘টুনি’র মতো হাজার বছর ধরে তোমার অন্ত্রে-তন্ত্রে বাজাবো বিষের বাঁশি। খোঁপায় দেওয়া নজরুলের তারার ফুল ছিনিয়ে ‘অনামিকা’র কণ্ঠে জড়িয়ে দেবো নীল রোদন।

সেদিন সাদাত হোসাইনের ‘কাজল চোখের মেয়ে’র মনেহয়তো জমবে রবির ‘অনন্তপ্রেম’,তবু মহাদেব সাহার ন্যায় সেদিন আর বলবো না‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও’।

এসইউ/