পাট পচানো পানি দিয়ে কি অজু করা যাবে?

পাট গাছ পচানোর কারণে পানি নাপাক হয় না। ওই পানি শরীর বা কাপড়ে লাগলে শরীর বা কাপড় অপবিত্র হবে না। এ রকম পানি দিয়ে অজু গোসল করাও জায়েজ। কোনো পুকুর বা খালে পাটগাছ পচানোর কারণে যদি ওই পুকুর-খালের পানির রং ও গন্ধ পরিবর্তন হয়ে যায়, তবুও এর দ্বারা অজু-গোসল করা যাবে, ওই পানি দিয়ে শরীর ও কাপড় পবিত্র করা যাবে। পানি যতক্ষণ তরল থাকবে, এর দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে বাধা নেই।

পুকুরের মতো বড় জলাশয়ে নাপাকি পড়লেও ওই পানি নাপাক হয় না যদি নাপাকির রং, গন্ধ ও স্বাদের কোনো একটিও পানিতে প্রকাশ না পায়। তবে বেশি নাপাকি পড়ার কারণে যদি পুকুরের পানিতে নাপাকির গন্ধ, রং বা স্বাদ প্রকাশ পায়, তাহলে ওই পানি নাপাক গণ্য হবে।

ইসলামে অজু কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধৌত করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের একটি পন্থা। নামাজ, তাওয়াফ, কোরআন স্পর্শ করার জন্য অজু অবস্থায় থাকা বাধ্যতামূলক। জিকির, তিলাওয়াতসহ অনেক আমল অজু ছাড়াও করা যায়, কিন্তু অজু অবস্থায় করলে সওয়াব বেড়ে যায়। কোনো আমলের উদ্দেশ্য ছাড়াও অজু করা, অজু অবস্থায় থাকা সওয়াবের কাজ। বিভিন্ন হাদিসে অজু অবস্থায় ঘুমানোরও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। কোরআনে নামাজ আদায়ের জন্য অজু করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا قُمۡتُمۡ اِلَی الصَّلٰوۃِ فَاغۡسِلُوۡا وُجُوۡهَکُمۡ وَ اَیۡدِیَکُمۡ اِلَی الۡمَرَافِقِ وَ امۡسَحُوۡا بِرُءُوۡسِکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ اِلَی الۡکَعۡبَیۡنِ ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوۡا ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡهِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ مِّنۡهُ ؕ مَا یُرِیۡدُ اللّٰهُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ حَرَجٍ وَّ لٰکِنۡ یُّرِیۡدُ لِیُطَهِّرَکُمۡ وَ لِیُتِمَّ نِعۡمَتَهٗ عَلَیۡکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَহে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাজে দাঁড়াতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে ভালোভাবে পবিত্র হও। আর যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা যদি স্ত্রী সহবাস কর অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত তা দ্বারা মাসেহ কর। আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না, বরং তিনি চান তোমাদের পবিত্র করতে এবং তার নিআমত তোমাদের উপর পূর্ণ করতে, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। (সুরা মায়েদা: ৬)

আরেক আয়াতে পবিত্রতা অর্জনকারীদের প্রশংসা করে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেছেন,

اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন। (সুরা বাকারা:২২২)

ওএফএফ/এএসএম