ধর্ম

সুরা নাজিআতে কেয়ামতের বর্ণনা

সুরা নাজিআতে কেয়ামতের বর্ণনা

সুরা নাজিআত কোরআনের ৭৯তম সুরা, এর আয়াত সংখ্যা ৪৬ এবং রুকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সুরা নাজিআত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরায় আল্লাহ তাআলা সুনিশ্চিতভাবে মানুষকে অবহিত করেছেন কেয়ামত সংঘটিত হবেই। মৃত্যুর পর মানুষকে আবার জীবিত করে হবে এবং নিজেদের কাজের প্রতিফল মানুষকে ভোগ করতেই হবে। সুরার শুরুতে মানুষের প্রাণ হরণকারী, আল্লাহর বিধানসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নকারী এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী সারা বিশ্ব জাহানের ব্যবস্থাপনা পরিচালনাকারী ফেরেশতাদের শপথ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলার অসীম ক্ষমতার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে; যে সর্বশক্তিমান স্রষ্টা সুনিপুনভাবে গোটা বিশ্বজাহান পরিচালনা করছেন, তিনি অবশ্যই পৃথিবী ধ্বংস করে দিতে, মানুষকে ‍পুনরায় জীবিত করে হিসাব নিকাশের জন্য জমা করতে সক্ষম।

Advertisement

সুরা নাজিআতের ১-১৪ আয়াতে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেন,

(১)

وَالنّازِعاتِ غَرْقاً

Advertisement

ওয়ান্নাঝিআতি গারকা।

শপথ সেই ফেরেশতাদের যারা (পাপীদের আত্মা) নির্মমভাবে টেনে বের করে,

(২) وَالنّاشِطاتِ نَشْطاً ওয়ান্নাশিতাতি নাশতা।আর যারা (নেককারদের আত্মা) খুবই সহজভাবে বের করে,

(৩) وَالسّابِحاتِ سَبْحاً ওয়াসসাবিহাতি সাবহা।শপথ সেই ফেরেশতাদের যারা দ্রুতগতিতে সাঁতার কাটে,

Advertisement

(৪) فَالسّابِقاتِ سَبْقاًফাসসাবিকাতি সাবকা।আর (আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য) ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে যায়,

(৫)فَالْمُدَبِّراتِ أَمْراًফাল মুদাব্বিরাতি আমরা।অতঃপর সব কাজের ব্যবস্থা করে।

(৬) يَوْمَ تَرْجُفُ الرّاجِفَةُ

ইয়াওমা তারজুফুররা-জিফাহ।সে দিন প্রথম শিংগাধ্বনি প্রকম্পিত করবে,

(৭)تَتْبَعُهَا الرّادِفَةُ তাতবাউহার রাদিফাহ।একে অনুসরণ করবে পরবর্তী শিংগাধ্বনি,

(৮)قُلُوبٌ يَوْمَئِذٍ واجِفَةٌ কুলূবুইঁ ইয়াওমাইযিওঁ ওয়াজিফাহ।কত হৃদয় সে দিন ভয়ে ভীত হয়ে পড়বে,

(৯)أَبْصارُها خاشِعَةٌ আবসারুহা খাশিআহ।তাদের দৃষ্টি ভীতি বিহবলতায় অবনমিত হবে।

(১০) يَقُولُونَ أَإِنّا لَمَرْدُودُونَ فِي الْحافِرَةِ ইয়াকূলূনা আইন্না লামারদূদূনা ফিল-হাফিরাহ।তারা বলে, আমাদেরকে কি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে?

(১১) أَإِذا كُنّا عِظاماً نَخِرَةً আইযা কুন্না ইজামান নাখিরাহ।আমরা গলিত অস্থিতে পরিণত হওয়ার পরও?

(১২) قالُوا تِلْكَ إِذاً كَرَّةٌ خاسِرَةٌ

কালূ তিলকা ইযান কাররাতুন খাসিরাহ।তারা বলে, তাই যদি হয় তাহলেতো এটা সর্বনাশা প্রত্যাবর্তন!

(১৩) فَإِنَّما هِيَ زَجْرَةٌ واحِدَةٌ

ফাইন্নামা-হিয়া ঝাজরাতুওঁ ওয়াহিদাহ।এটি হবে এক বিকট আওয়াজ,

(১৪) فَإِذا هُمْ بِالسّاهِرَةِ ফাইযা হুম বিসসাহিরাহ।সহসাই তারা খোলা ময়দানে আবির্ভূত হবে।

এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই

১. আল্লাহ তাআলা অসীম ক্ষমতার অধিকারী। এই মহাবিশ্ব তার ক্ষমতা ও পরিচালনার অধীন। তিনি তার ইচ্ছা অনুযায়ী ফেরেশতাদের বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত রেখেছেন। ফেরেশতারা তার নির্দেশ অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করে।

২. পাপীদের রূহ বা আত্মা ফেরেশতারা বের করেন কষ্টকর ও নির্মমভাবে। বিপরীতে নেক ব্যক্তিদের আত্মা দ্রুত কষ্টহীনভাবে বের করা হয়।

৩. কেয়ামত সংঘটিত হবেই এবং মানুষ হিসাব নিকাশের জন্য পুনরায় জীবিত হবেই। তাই সেজন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা আমাদের কর্তব্য।

৪. কেয়ামতের দিন অবিশ্বাসীরা ভীতবিহ্বল হয়ে পড়বে। ভয়াবহ পরিণতি চিন্তা করে তাদের মাথা ঝুঁকে পড়বে। তাদের সামনে মুক্তির কোনো পথ খোলা থাকবে না।

ওএফএফ/এএসএম