ফিচার

২ ফুট চওড়া বিশ্বের সবচেয়ে ছোট পার্ক

সারাদিনের ব্যস্ততার পর অনেকেই কিছু সময় কাটান বাড়ির পাশের কোনো পার্কে। অনেকে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে যান। যেন কংক্রিটের শহরে কিছুটা মুক্ত বাতাস পেতে পারে এবং খেলাধুলা করতে পারে। বিশ্বের যেখানেই যান না কেন পার্ক পাবেন পাড়া বা মহল্লার মধ্যে। যেখানে শিশুদের হট্টগোলে মুখর থাকে চারদিক।

Advertisement

তবে এমন একটি পার্ক আছে যেখানে কেউ খেলাধুলা করে না। হয় না কোনো বন্ধুদের আড্ডা। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট পার্ক হিসেবেই খ্যাতি এর। মাত্র ২ ফুট চওড়া এবং এর মোট এলাকার পরিমাণ ৪৫২ বর্গ ইঞ্চি। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে ছোট পার্কের নাম ‘মিল এন্ডস পার্ক’। এটি রয়েছে আমেরিকার ওরেগন রাজ্যের পোর্টল্যান্ডে।

আরও পড়ুন: নিজের রেকর্ড ভাঙলেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঠোঁটের নারী 

পার্কটি এতই ছোট যে তাকে একটি টবও বলা চলে। সেখানে মাত্র একটিই গাছ লাগানো যায়। তবে এই পার্কের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। ১৯৪৮ সালে এই পার্কটিকে একটি সিটি পার্ক হিসেবে গণ্য করা হতে শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে এটিকে সবচেয়ে ছোট পার্কের মর্যাদাও দেওয়া হয়।

Advertisement

পার্কটি ১৯৪৬ সালে তৈরি করেন ডিক ফাগান নামে এক ব্যক্তি। ডিক ফাগান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ওরেগন ফিরে এসে সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার অফিসের সামনের রাস্তায় একটি বড় গর্ত তৈরি করা হয়েছিল। আসলে সেখানে বৈদ্যুতিক আলোর খুঁটি বসানোর কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন পর্যন্ত সেখানে খুঁটি লাগানো না হওয়ায় ডিক একটি গাছ লাগিয়ে দেন।

আরও পড়ুন: ফটোগ্রাফি করে মাসে লাখ টাকা আয় এমদাদের 

ডিক সেই সময় ‘মিল এন্ড’ নামে একটি কলাম লিখতেন সংবাদপত্রে। এই কলামে শহরের বিভিন্ন পার্ক নিয়ে প্রতিবেদন লিখতেন, সেখানে কী অনুষ্ঠান হচ্ছে তার তথ্য দিতেন। এই পার্কের তথ্যও দিতে থাকেন। তিনি নিজেই এটির নামকরণ করেন এবং এটিকে সবচেয়ে ছোট পার্ক হিসেবে তুলে ধরেন। এই পার্কটি সেন্ট প্যাট্রিক দিবসে উৎসর্গ করা হয়েছিল। আসলে ফাগান নিজে একজন আইরিশ ছিলেন।

ফাগানের লেখায় উঠে আসে আইরিশ গল্পের কাল্পনিক চরিত্র লেপ্রেচাউনদের কথা। তিনি বলতেন এই ছোট্ট পার্কে আসে লেপ্রেচাউনেরা। ১৯৫৯ সালে তার মৃত্যু পর্যন্ত চলে এই পার্কের কাল্পনিক জগতের গল্প। আসলে লেপ্রাচাউনেরা খুবই খর্বাকৃতি। ফাগানের মৃত্যুর পরেও মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে, এই পার্কে প্রজাপতি, শামুক ইত্যাদির প্রাণীরা আসে, তাদের দৌড় প্রতিযোগিতা হয়। পার্কটি ঠিক আগের মতোই রয়ে গেছে। তবে ২০০৬ সালে কিছু কাজের জন্য পার্কটি কয়েক দিনের জন্য অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সূত্র: দ্য ফ্যাক্ট সাইট, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস

Advertisement

কেএসকে/জিকেএস