সাহিত্য

হাওয়া তত্ত্ব এবং অন্য কবিতা

সৌমেন্দ্র গোস্বামী

Advertisement

হাওয়া তত্ত্ব

ছোটবেলায় সাইকেলের টায়ারে হাওয়া দিতে কষ্ট হতোবুকে ভর দিয়ে পাম্প করতামপাম্পার ধীরে ধীরে ফুলিয়ে দিতো বৃত্ত আকৃতির গোল টায়ারকিন্তু বড় হলাম, আরও বড় হলামক্লাস, সেমিনার, সংগঠনসর্বত্র চোখে পড়ল হাওয়ার জয় জয়াকারবুঝতে কষ্ট হয়নি, অন্ধ মাধবের পা চেটে যত আনন্দযতটা স্বার্থসিদ্ধি হয়যতটুকু সঞ্চয়ে নিজেকে জাগিয়ে রাখা যায়বিদ্যা, বিবেক ও সামর্থ সেখানে নিঃসহায়বলো সুবিধাবাদীরা, হাওয়া তত্ত্ব তোমাদের আর কী শেখায়?

****

Advertisement

অভিশাপ

কখনো কখনো বুকের ভেতর ঈশ্বর জেগে ওঠেনকখনো নিজেকে অসহায় মনে হয় অব্যবহৃত সেলফোনের মতো ব্যবহৃত কণ্ঠআবৃত্তির স্বরে তোমাকে ডাকেমাথা নোয়ানোর দোলেঈশ্বর জেগে উঠলেকোথায় পালাবে?রক্তের গন্ধ হাতে কত দূর এগোতে পারে মানুষ!তুমি কতটা পারবে?ইতিহাস খুলে দেখ—ঈশ্বরের অভিশাপ কখনো করেনি প্রবঞ্চনা!

****

সোয়েটার

Advertisement

বাতাসের জল ছুঁয়ে দেখেছি, একেবারেই সুগন্ধহীনমায়ের হাতে বোনা সোয়েটারের গন্ধকোথায় গেলে পাই?পেরিফেরির ওপর সমুদ্র নির্মাণের লোভবীর্য বিসর্জনের আনন্দ দিতে পারে ঠিকতবুও মন যেন কেমন কেমন করেআর কতদিন, কতদিন পর দু’চোখ জাগবে,কতগুলো সুরম্য সন্ধ্যা উদযাপন শেষে মায়ের কাছে পৌঁছাবো?লাল সোয়েটার হাতে মা যে অপেক্ষা করে আছেন।

****

প্রজাপতি

সব পুরুষের একটা প্রজাপতি ধরার গল্প বাকি থেকে যায়,একজন আমাকে বলেছিলেন; কিন্তু বিশ্বাস করিনি তখনরাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির মতো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথা মনে হয়েছিল ভেবেছিলাম, পুরুষের কিছু বাকি থাকতেই পারে না জীবনেঅথচ শূন্য রাতে শূন্য হাতে ডুমুর ফলের সৌরভ বয়ে আনা তৃষিত পূর্ণিমায়জলের বানের মতো আক্ষেপে অপূর্ণতায়তার সুর ধরে গান ধরে বৃক্ষের গোপণ প্রকোষ্ঠেজীবিত জীবনের মতো আমার এ থেমে যাওয়া, অপেক্ষা, অকিঞ্চিৎকরতা মোটেই নিরর্থক নয়আমারও ইদানীং মনে হয়বেশিরভাগ পুরুষই একটা প্রজাপতি ধরার আক্ষেপ রেখে যায়!

এসইউ/এমএস