ধর্ম

কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার মাস রমজান

রমজানে কোরআন পাঠে সওয়াব বেশি। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অত্যধিক সাওয়াব পাওয়ার জন্য রমজানই মোক্ষম সময়। কোরআন শরিফের বিশেষত্ব হচ্ছে, একটি হরফ তেলাওয়াতে দশটি নেকি হাসিল হয়। রমজানের বিশেষত্ব হচ্ছে, একটি নেকি দশ থেকে সাতশত পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। তাই মাহে রমজানে কোরআনের একটি হরফ তেলাওয়াত করলে দশ থেকে সাতশত পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। রমজান কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার মাস। তাই কোরআন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জানা জরুরি। তাহলো-

Advertisement

মাহে রমজান ও কোরআন

কোরআন নাজিলের মাস রমজান। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাস, যে মাসে নাজিল করা হয়েছে আল কোরআন, মানুষের জন্য হেদায়াতরূপে এবং পথনির্দেশনার প্রমাণ ও সত্য-মিথ্যা পার্থক্য নির্ণয়কারী হিসেবে।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৮৫)

রমজানে কোরআন পাঠ

Advertisement

আল্লাহ তাআলা কোরআনের মাধ্যমেই রমজানের পরিচয় দিয়েছেন। তাই স্পষ্টত কোরআন কারিম অবতীর্ণের মাধ্যমেই মাহে রমজানের ফজিলত বেড়েছে বহুগুণ। হাদিসে এসেছে, ‘অন্যান্য মাসসমূহে যে আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হতো, রমজান মাসে সব একসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিবরিল আলাইহিস সালামকে শোনাতেন। আবার জিবরিল আলাইহিস সালাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শোনাতেন। এভাবে পরস্পর কোরআন তেলাওয়াত করতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)

রমজান ও কোরআন একই সুতোয় গাঁথা

রমজানের কারণেই এই নফল ইবাদতটি আল্লাহর দরবারে ফরজের মর্যাদায় গণ্য হচ্ছে। সুতরাং যারা মাহে রমজানে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করেন, নিঃসন্দেহে তারা অফুরন্ত অগণিত সওয়াবের অধিকারী হয়ে থাকেন। রমজান ও কোরআন দুইয়ের বিশেষত্বকে এক সুতোয় গাঁথা যায় একটি মাধ্যমে। তা হলো, রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াত করা।

রমজানে পূর্বসূরিদের কোরআন পাঠ

Advertisement

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পূর্বসূরি বুজুর্গানে দ্বীন রমজান মাসেই অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। যেমন-

১. ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি রমজান মাসে কোরআন শরিফ মোট ৬১ (একষট্টি) বার খতম দিতেন। প্রতি রমজানের দিনে এক খতম করতেন। আবার রাতে এক খতম করতেন। বাকি এক খতম পুরো রমজানের তারাবির নামাজে আদায় করতেন। (তারিখে বাগদাদ)

২. ইমাম বুখারি রহমাতুল্লাহি আলাইহি রমজান মাসের প্রতি রাতে ১ খতম কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করতেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

৩. হজরত আবু কাতাদা রহমাতুল্লাহি আলাইহি রমজান মাসে প্রতি ৩ দিনে এক খতম কোরআন তেলাওয়াত করতেন। শেষ দশকে প্রতি রাতে ১ খতম দিতেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা)

রমজান কোরআন তেলাওয়াতকারীর জন্য সোনায় সোহাগা

কোরআন মানবজীবনের অকাট্য সংবিধান, বিশেষত মুসলমানদের জন্য। যা নাজিল হয়েছে পবিত্র রমজান মাসে। তাই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত এ বিশেষ নেয়ামতের শুকরিয়া আদায়ের নিমিত্তে হলেও রমজান মাসে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত। আর রমজানে কোরআন তেলাওয়াত করলে যে তেলাওয়াতকারীর জন্য তা সোনায় সোহাগা হবে, সেটাও সহজেই অনুমেয়। রমজানের বিশেষত্বই কোরআন। প্রতি রাতে কোরআন খতম দিয়ে যেনো মুসলিম উম্মাহকে এ মহান শিক্ষাই দিয়েছেন ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম বুখারি রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা। তাই কোরআন নাজিলের মাসে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার চেষ্টা করি।

এমএমএস/জেআইএম