ভ্রমণ

ম্যারাডোনা-মেসির দেশে দেখার মতো যা যা আছে

সাইফুর রহমান তুহিন

Advertisement

ফুটবল খেলার জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি আছে দিয়েগো ম্যারাডোনা ও লিওনেল মেসির দেশ আর্জেন্টিনার।

তবে এর বাইরেও দক্ষিণ আমেরিকার বিশাল এই দেশ সুপরিচিত বিশ্বসেরা কিছু ন্যাশনাল পার্ক, প্রাণচঞ্চল ও জীবন্ত সব শহর, ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটস প্রভৃতির জন্য।

চলুন জেনে নেওয়া যাক ম্যারাডোনা-মেসির দেশে গিয়ে দেখার মতো কী কী আছে-

Advertisement

রোজারিও

এটি আর্জেন্টিনার তৃতীয় বৃহত্তম শহর। কিংবদন্তি ফুটবলার লিওনেল মেসি ও বিশ্বখ্যাত বিপ্লবী চে গুয়েভারার জন্মস্থান এই রোজারিওতে। আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বাইসাইকেলবান্ধব শহরগুলোর অন্যতম এটি।

তাই রোজারিওকে নিজের মতো করে আবিষ্কার করার সেরা উপায় হলো একটি বাইসাইকেল ভাড়া করে ঘোরাঘুরি করা। জায়গাটিকে ভালো করে ঘুরে দেখার করার সেরা মাধ্যম হচ্ছে সাইক্লিং করা অথবা পারানা নদীতে কায়াকিং করা।

বুয়েনস আইরেস

Advertisement

‘দক্ষিণ আমেরিকার প্যারিস’ নামে পরিচিত বুয়েনস আইরেসে আছে দারুণ সব ঐতিহাসিক স্থান, জীবন্ত সব বিনোদনমূলক দৃশ্য ও আরও অনেক কিছু।

আপনি অতীতে যেসব জায়গায় বেড়িয়েছেন সেগুলো থেকে এটিকে আলাদাই মনে হবে কারণ, বুয়েনস আইরেসে পাবেন দক্ষিণ আমেরিকান সৌরভের সঙ্গে ইউরোপিয়ান আভিজাত্য আর এই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়েই দাঁড়িয়ে আছে শহরটি।

সত্যি কথা হলো এই শহরটি ভীরুদের জন্য নয়, এটি অনেকটা নিজস্ব আকর্ষণ ও স্মার্টনেস দিয়ে নবাগতদেরকে অভিভূত করে।

উসুআইয়া

‘দ্য সিটি অ্যাট দ্য অ্যান্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে বিখ্যাত উসুআইয়া আর্জেন্টিনায় বেড়াতে যাওয়াদের জন্য বিস্ময়কর এক জায়গা আর তা ভালো কারণগুলোর জন্যই।

উসুআইয়াতে একবার বেড়ানো মানে দু’চোখের জন্য অনাবিল প্রশান্তি তা আপনি সড়কপথেই যান আর আকাশপথেই যান। শান্ত ও নিরিবিলি জায়গাটির আছে আপনার ভ্রমণকে স্মরণীয় করে রাখার মতো অপরূপ সুন্দর সব দৃশ্যাবলী, ছবির মতো সুন্দর ট্রেনে চড়া ও নজরকাড়া বন্য জীবন।

বারিলোচে

শান্ত-নিরিবিলি লেক আর বিশাল পর্বতমালা দ্বারা ঘেরা বারিলোচে এককথায় দুর্দান্ত। আর্জেন্টিনায় বেড়ানোর পরিকল্পনা যদি করেই থাকেন তাহলে এই নজরকাড়া পর্বতমালাকে আপনার ভ্রমণসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করুন।

বারিলোচেতে যখন যাবেন তখন অবশ্যই মামুশকা চকোলেট ও হেলোডোস জাউজা আইসক্রিমের স্বাদ পরখ করতে ভুলবেন না। এগুলো সেখানে দারুণ জনপ্রিয়।

মেনডোজা

আন্দিজ পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এই দৃষ্টিনন্দন শহরটির সৌন্দর্য উপভোগ করার ভালো উপায় হলো আয়েশি ভঙ্গিতে ঘুরে বেড়ানো। আর্জেন্টিনায় অবশ্যই দেখার মতো গন্তব্যগুলোর একটি হলো মেনডোজা যেটি তার মদের জন্যও বিখ্যাত।

ঘুরে দেখার মতো তিনটি ওয়াইন রিজিওন অর্থাৎ বিশাল আঙুর ক্ষেত রয়েছে মেনডোজা প্রদেশে। তবে কতোটুকু দেখবেন তা নির্ভর করে সেখানে আপনার অবস্থানকালের ওপর।

ইবেরা ওয়েটল্যান্ডস

ইবেরা ওয়েটল্যান্ডস বা ইবেরা জলাভূমি হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্দমাক্ত ভূমি যেখানে সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বিস্ময়কর সব প্রাণি। বন্যজীবন সম্পর্কে খুব উৎসাহীদের স্বর্গ এটি।

বিখ্যাত ইগুয়াজু জলপ্রপাত ও বুয়েনস আইরেসের মধ্যবর্তী অবস্থান হওয়ার কারণে জায়গাটি থাকতে পারে আপনার আর্জেন্টিনা ভ্রমণের বিশেষ তালিকায়।

আপনি যদি বিমানে চড়ে যান তাহলে সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর হলো পসাডাস যেখান থেকে সড়কপথে যেতে হবে ইবেরা ওয়েটল্যান্ডসে।

ইগুয়াজু জলপ্রপাত

ঘন সবুজ বনের মধ্যে অবস্থিত ইগুয়াজু জলপ্রপাত দেখার জন্য সত্যিই বিস্ময়কর জায়গা। চমৎকার এই জলপ্রপাতটি ব্রজিল-আর্জেন্টিনা সীমান্তে অবস্থিত।

জেনে অবাক হবেন, এই জলপ্রপাতে আছে ২৭৫টি ছোট ছোট ঝরনা। যা এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম ভগ্ন জলপ্রপাতে পরিণত করেছে। এই জলপ্রপাত আসলে তৈরি হয়েছে ইগুয়াজু নদী দ্বারা সৃষ্ট একগুচ্ছ ঝরনা থেকে।

সালটা

দৃষ্টিনন্দন প্রদেশ সালটায় বেড়াতে যাবার অনেক কারণ রয়েছে। ছবির মতো সুন্দর ল্যান্ডস্কেপে ভরপুর সালটায় রয়েছে চিরসবুজ পর্বতমালা ও নজরকাড়া উপত্যকাসমূহ।

ইনকান ও অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সালটার আকর্ষণ অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে।

লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ফিচার লেখক।

জেএমএস/এমএস