জাগো জবস

উদ্যোক্তা সালমার রেস্তোরাঁয় মাসে আয় দেড় লাখ টাকা

২০১৭-২০১৮ সালে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৫ হাজার ১৯টি পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়। নদীগর্ভে বিলীন হয় হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ৮টি গ্রাম। ভাঙন ঠেকাতে ২০১৮ সালে একনেক সভায় অনুমোদন পায় ‘নড়িয়া-জাজিরা পদ্মা ডানতীর স্থায়ী বাঁধ প্রকল্প’। বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় নড়িয়া নদীভাঙন থেকে রক্ষা পায়।

Advertisement

সেই বাঁধের ওপর তৈরি করা হয়েছে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা সড়ক। যার নামকরণ করা হয়েছে ‘জয় বাংলা এভিনিউ’। জয় বাংলা এভিনিউটি এখন পর্যটনের এক বিশেষ এলাকা। সেখানে ঘুরতে গেলেই চোখে পড়বে ‘খাঁন ফাস্ট ফুড এম্পোরিয়াম’ নামে একটি রেস্তোরাঁ। বাঁধঘেঁষে কেদারপুর এলাকায় উদ্যোক্তা সালমা খান ও তার তিন মেয়ে গড়ে তুলেছেন এটি। এ ছাড়া চোখে পড়বে চটপটি, ফুচকা, বাদাম, খাবারের হোটেল প্রভৃতি।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সালমা খান বলেন, ‘১৯৯৯ সালে আমি আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে যাই। সেখানে গিয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করি। পরে সান ফ্রান্সিসকোতেও ব্যবসা করি। যখন শুনি নড়িয়ায় ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ হয়েছে; তখন বাঁধঘেঁষে আমার তিন মেয়ে হেলেনা আক্তার, তাসলিমা আক্তার ও মিথিলা আক্তারকে নিয়ে রেস্টুরেন্টটি চালু করি। জমিসহ রেস্টুরেন্টটি চালু করতে আমার ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যবসার কাজে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকি। তাই আমার মেয়ে তাসলিমা, হেলেনা ও মিথিলা রেস্টুরেন্টটির পরিচালনার দায়িত্বে আছে। এ ছাড়া আছেন পাঁচজন কর্মচারী। এখানে চাইনিজ, থাইসহ দেশীয় খাবার পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের জুস পাওয়া যায়। এসব খাবার তৈরি এবং পরিবেশন করে আমার মেয়েরা। এ রেস্টুরেন্ট থেকে মাসিক আয় প্রায় দেড়লাখ টাকা।’

Advertisement

সালমা আরও বলেন, ‘শখ থেকে ব্যবসা শুরু। আমি এখন প্রতিষ্ঠিত। আমি মনে করি, পুরুষ বা নারী যে কেউ নিজের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। আমি একজন নারী উদ্যোক্তা। আমি চাই, বাংলার প্রতিটি ঘরে একজন নারী উদ্যোক্তা গড়ে উঠুক। তাতে বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।’

সালমা খানের মেয়ে হেলেনা আক্তার বলেন, ‘বিফ বার্গার, চিকেন বার্গার, পাস্তা, নুডলস, চিকেন তন্দুরি, লুচি, চাইনিজ, থাইসহ দেশীয় খাবার পাওয়া যায় এখানে। আমরা খাবার তৈরি করি এবং পরিবেশন করে থাকি। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ক্রেতার চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী খাবার তৈরি করে থাকি।’

বাঁধে ঘুরতে আসা সাফ্ফার সিকদার, আল আমিন সিকদার, আকাশ আহম্মেদ বলেন, ‘রেস্টুরেন্টটির খাবার খুবই সুস্বাদু। তাই মাঝে মাঝে এখানে খেতে আসি। রেস্টুরেন্টে বসে পদ্মার ঢেউ দেখতে পাওয়া যায়। এখানে কক্সবাজার বা কুয়াকাটার কিছুটা স্বাদ আছে।’

মো. ছগির হোসেন/এসইউ/জেআইএম

Advertisement