কৃষি ও প্রকৃতি

প্রথমবারের মতো এআইপি সম্মাননা পেলেন ১৩ জন

কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রথমবারের মতো ১৩ ব্যক্তিকে ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এগ্রিকালচারালি ইম্পর্ট্যান্ট পারসন-এআইপি)’ সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয়েছে। এআইপিরা সিআইপির মতো বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।

Advertisement

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।

এআইপি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি বছর মোট ৫টি বিভাগে সর্বোচ্চ ৪৫ জনকে এআইপি সম্মাননা প্রদান করা হবে। এআইপি কার্ডের মেয়াদ এক বছর।

Advertisement

এআইপি সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- কৃষি উদ্ভাবন বিভাগে বাউধান-৩ এর জাত উদ্ভাবনের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, দুটি বীজ আলুসহ মোট ১০টি সবজির জাত উদ্ভাবন ও বাজারজাতকরণে এ আর মালিক সিডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউস সোপান মালিক, মেহগনি ফলের বীজ থেকে তেল তৈরির জন্য ফিউচার অর্গানিক ফার্মের সৈয়দ আব্দুল মতিন, আলীম পাওয়ার ট্রিলার উদ্ভাবনের জন্য আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের আলীমুছ ছাদাত চৌধুরী।

কৃষি উৎপাদন বা বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প বিভাগে এআইপি সম্মাননা প্রাপ্ত ৬ জন হলেন- নাটোর সদরের দৃষ্টান্ত অ্যাগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নার্সারির মো. সেলিম রেজা, ঠাকুরগাঁওয়ের চামেশ্বরীর মো. মেহেদী আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ঝালকাঠি সদরের এশা ইন্টিগ্রেটেড অ্যাগ্রিকালচার ফার্মের মো. মাহফুজুর রহমান, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের জাগো কেঁচো সার উৎপাদন খামারের মালিক মো. বদরুল হায়দার বেপারী, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার নুর জাহান গার্ডেনের মো. শাহবাজ হোসেন খান এবং কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বিছমিল্লাহ মৎস বীজ উৎপাদন কেন্দ্র ও খামারের মো. সামছুদ্দিন (কালু)।

কৃষি সংগঠন বিভাগে নওগাঁর শাহ্ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের জাহাঙ্গীর আলম এআইপি মনোনীত হয়েছেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত বিভাগে নির্বাচিত দুজন হলেন- পাবনার ঈশ্বরদীর মোছা. নুরুন্নাহার বেগম এবং মো. শাহজাহান আলী বাদশা।

বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-সিআইপি’র ন্যায় কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ১৩ ব্যক্তিকে এআইপি (এগ্রিকালচারাল ইমপর্টেন্ট পারসন) সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, কৃষিখাতসহ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কৃষিবিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী, বাণিজ্যিক কৃষি খামার স্থাপনকারী, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী ও কৃষি সংগঠকদের প্রতি বছর এআইপি সম্মাননা দেওয়া হবে।

৫টি বিভাগের মধ্যে ‘ক’ বিভাগে কৃষি উদ্ভাবন ‘জাত ও প্রযুক্তি’ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ জন পাবেন এ সম্মাননা। ‘খ’ বিভাগে কৃষি উৎপাদন এবং বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ক্ষেত্রে সম্মাননা পাবেন সর্বোচ্চ ১৫ জন। একটি প্রশাসনিক বিভাগ থেকেও সম্মাননা পাবেন সর্বোচ্চ ২ জন। ‘গ’ বিভাগে রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদনে সর্বোচ্চ ১০ জন এ সম্মাননা লাভ করবেন। ‘ঘ’ বিভাগে স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত কৃষি সংগঠনের সর্বোচ্চ ৫ জন এবং ‘ঙ’ বিভাগে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত সর্বোচ্চ ৫ জন এআইপি সম্মাননায় ভূষিত হবেন।

কৃষি মন্ত্রণালয় ৪টি কমিটির মাধ্যমে এআইপি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে- ইউএনওর সভাপতিত্বে উপজেলা কমিটি, চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার পরিষদ (৩টি পার্বত্য জেলার জন্য) এবং জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জেলা কমিটি, যুগ্ম সচিব (সম্প্রসারণ, প্রশাসন, পিপিবি) ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের আহ্বায়ক হিসেবে প্রাথমিক বাছাই কমিটি। এছাড়া সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে চূড়ান্ত বাছাই কমিটি।

জানা গেছে, সিআইপির সুযোগ-সুবিধার মতোই এআইপিরা পাবেন বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা। এগুলো হলো- এআইপি কার্ডের সঙ্গে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রশংসাপত্র। একজন এআইপিকে দেওয়া প্রদত্ত সুবিধাদির মেয়াদ থাকবে সম্মাননা প্রদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছর। এআইপিরা সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য পাবেন বিশেষ পাস। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ও সিটি কিংবা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে ভ্রমণকালীন সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে পাবেন আসন সংরক্ষণ অগ্রাধিকার।

একজন এআইপির ব্যবসা বা দাপ্তরিক কাজে বিদেশে ভ্রমণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসাপ্রাপ্তির নিমিত্তে বিশেষ সুবিধা পাবেন। একজন এআইপি তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, মাতা, পিতা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। এছাড়া বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহার সুবিধা পাবেন এআইপিরা।

এনএইচ/ইএ/এএসএম