লাইফস্টাইল

মানসিক চাপ যেভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়

ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কেকে মারা যাওয়ার পর থেকে হৃদরোগের বিষয়ে জানার আগ্রহ বেড়েছে সবার মনেই। মঞ্চে পুরোদমে গান গাওয়ার কিছুক্ষণ পর হোটেলে ফিরেই মৃত্যুবরণ করেন কেকে।

Advertisement

চিকিৎসকরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই শিল্পী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদরোগের পেছনে থাকতে পারে একাধিক কারণ। উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এমনকি মানসিক চাপও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক চাপ বেড়ে গেলে তা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ বিভিন্ন ধরনের সংবহনতন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি করতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের ফলে মানসিক অস্থিরতা, অবসাদ কিংবা অনুভূতির আকস্মিক বদল মতো দেখা দিতে পারে।

মানসিক চাপ, পেশির দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথা যন্ত্রণা কিংবা অনিদ্রার মতো সমস্যাও ডেকে আনতে পারে। তবে মানসিক চাপের সঙ্গে হৃদরোগের সম্পর্ক কোথায়?

Advertisement

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক চাপ বা ‘স্ট্রেস’ হৃদযন্ত্র ও সংবহনতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। মানুষের হৃদযন্ত্র ও হৃদযন্ত্রের রক্তপ্রবাহের সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক চাপের কী সম্পর্ক, তা জানতে ২০২১ সালে ৯০০ জন মানুষের উপর একটি গবেষণা করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত মানসিক চাপ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ও কার্যকারিতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ৫২টি দেশের ২৪ হাজারেরও বেশি রোগীর উপর করা আরও এক গবেষণাতেও ধরা পড়েছিল বিষয়টি।

ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, দীর্ঘ ৫ বছর মানসিক চাপে ভোগা মানুষের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত মস্তিষ্কের ‘অ্যামিগ্ডালা’ নামক একটি অংশ এই মানসিক চাপ তৈরির প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কেউ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লে এই অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।

Advertisement

মস্তিষ্ক এরপর দেহকে নির্দেশ দেয় স্ট্রেস হরমোন উৎপাদন করতে। এই হরমোনের প্রভাবে হৃদ্পিণ্ডে রক্তের প্রবাহ কমে যেতে পারে। আকস্মিক বিপদের সময়ে হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে আনতে এই বিষয়টি খুবই কার্যকর।

তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে তা সংবহনতন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এতে দেখা দেয় রক্তনালির প্রদাহ, স্থূলতা কিংবা ইনসুলিনের কাজের পথে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ার মতো সমস্যা।

এসব কিছুই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, হৃদদযন্ত্র ভালো রাখতে কমাতে হবে মানসিক চাপ।

সূত্র: হেলথলাইন

জেএমএস/জিকেএস