সেই দৃঢ়তা এবং সুক্ষ্ম নিয়ম কি, যার মাধ্যমে পৃথিবীর মুমিনদেরকে দেখা যায় যে, তারা নির্দিষ্ট সময় পানাহার থেকে বিরত হচ্ছেন, আবার নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর পানাহার করছেন? অতঃপর নিজের নফসকে কুপ্রবৃত্তির মধ্যে পতিত হওয়া অথবা পথভ্রষ্টতার বাতাসে ভেসে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে পারছেন!
Advertisement
রোজাদার ব্যক্তি তো তিনিই, যিনি কুপ্রবৃত্তি এবং কামনার উদ্রেককারী প্রত্যেক বিষয়কে 'না' বলে দেবেন। আর তার এই 'না' বলা হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী। রোজাদার অশ্লীল কাজ করবে না। ঝগড়া করবে না। এমনকি উঁচুস্বরে কথাও বলবে না। কোনো মূর্খ যদি তার অনুভূতিকে আহত করে ও তার ভেতরের খারাপ জিনিসকে জাগিয়ে তোলে, প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করে তবুও তিনি বলবেন, 'আমি সিয়াম পালনকারী'।
আর মানুষ তো নিজের অভ্যাসের গোলাম। যতই সে চেষ্টা করে, ফিরে আসতে পারে না নফসের গোলামি থেকে। কেননা, অভ্যাসের বিরাট প্রভাব রয়েছে অন্তর ও নফসের ওপর। আমাদের অনেকের পানাহার, ঘুমানো, জাগ্রত হওয়া ইত্যাদির ব্যাপারে অনেক রকম অভ্যাস রয়েছে। তার থেকে সে বিরত হতে পারে না। সিয়াম এসব অভ্যাস থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বিরাট উপকারী।
মুসলমান ইচ্ছে করলে এর মাধ্যমে অনেক অভ্যাস থেকে নাজাত পেতে পারে কোনো কষ্ট এবং ক্ষতি ছাড়াই। অতঃপর যেসব অভ্যাস তার ক্ষতি করে, সেগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে। যেমন- রাত জেগে অনুষ্ঠান উপভোগ করা, গোনাহ হয় এমন অনুষ্ঠানে যাওয়া, কারও সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা, বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা ইত্যাদির অভ্যাস করা। এ ধরনের যত নেশা জাতীয় অভ্যাস আছে, তা পরিত্যাগ করা।
Advertisement
মূলত এ সবকিছু হয় দুর্বল মানসিকতা বা এগুলোর কাছে আত্মসমর্পনের কারণে। সুস্থ, ভদ্র ও বিবেকবানরা কখনও এমন কাজ করতে পারে না। যদি সিয়াম পালন করতে চান, তবে হিংসা, গোনাহ এবং অন্যায় থেকে বিরত থেকে সিয়াম পালন করতে হবে। সিয়াম অবস্থায় জিহ্বাকে অহেতুক কথা থেকে, দৃষ্টিকে হারাম থেকে বিরত রাখা চাই।
অনেক সিয়াম পালনকারী আছেন, তার সিয়াম উপবাস এবং পিপাসিত থাকা ছাড়া আর কোনো উপকারে আসে না। সে ওই ব্যক্তি, যে আহার বাদ দিলো; কিন্তু পরনিন্দার মাধ্যমে নিজের ভাইয়ের গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারল না। পান করা থেকে বিরত থাকল, কিন্তু মিথ্যা, ধোঁকা, মানুষের ওপর অত্যাচার থেকে বিরত হলো না।
মুনশি/এসইউ/এএসএম
Advertisement