কুরআন তেলাওয়াত করতে হবে সুস্পষ্ট ও সুন্দর ভাষায়। তারতিলের সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করার কথা এসেছে কুরআনে। কিন্তু কুরআনুল কারিম কি উচ্চ স্বরে তথা জোরে এবং নিচু স্বরে তথা নিরবে পড়া যাবে কি? এ সম্পর্কে হাদিসের নির্দেশনাই বা কি?
Advertisement
কুরআন আল্লাহর কিতাব। এ কিতাবের প্রতিটি আয়াত ও নির্দেশনা মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারি। আর এর তেলাওয়াত হতে হবে সুস্পষ্ট ও সুবিন্যস্ত। যাতে কুরআনের ভাব-ভাষা এবং বিধান কারও বুঝতে অসুবিধা না হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘কুরআন তেলাওয়াত করুন সুবিন্যস্ত ও সুস্পষ্টভাবে। আমি আপনার নাজিল করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। নিশ্চয় ইবাদতের জন্য রাতে ওঠা প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ ও স্পষ্ট উচ্চারণের জন্য অনুকূল পরিবেশ।’ (সুরা মুযযাম্মিল : আয়াত ৪-৬)
‘হ্যাঁ’ কুরআনুল কারিম উচ্চ স্বরে এবং নিরবে তথা জোরে ও আস্তে উভয়ভাবেই পড়া যাবে। এ ব্যাপারে হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে-
Advertisement
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু কাইস রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কুরআন তেলাওয়াত করা সম্পর্কে হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা প্রশ্ন করলাম- তাঁর কুরআন তেলাওয়াত কেমন ছিল? তিনি কি তা চুপি চুপি পড়তেন না সশব্দে পড়তেন? তিনি (হজরত আয়েশা) বললেন, উভয়ভাবেই পড়তেন। কখনো তিনি তা চুপে চুপে পড়তেন, আবার কখনো সশব্দে পড়তেন। আমি বললাম, সব প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য; যিনি এ ব্যাপারে প্রশস্ততর ব্যবস্থা রেখেছেন। (আবু দাউদ, মুসলিম, বুখারি)
ইসলামিক স্কলারদের মতে, সুন্দর, সুললিত ও মিষ্টি কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করাকে মোস্তাহাব। কুরআনের নির্দেশনা ও হাদিসের আলোকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, মধুরকণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করা উত্তম। উভয়ভাবে কুরআন পড়ার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি সুন্দর উপমা তুলে ধরেছেন। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সশব্দে কুরআন তেলাওয়াতকারী প্রকাশ্যে দান-সাদকাকারীর মতো। আর নিঃশব্দে কুরআন তেলাওয়াতকারী গোপনে দানকারীর মতো।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, তিরমিজি)
মুমিন মুসলমানের জন্য উভয়ভাবেই কুরআন তেলাওয়াত করা এবং অধ্যয়ন করার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং যারা যেভাবে কুরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়নে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন সেভাবেই কুরআন তেলাওয়াতে কোনো বাধা নেই।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আস্তে কিংবা জোরে উভয়ভাবেই কুরআন তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম