ধর্ম

বিশ্বনবির প্রতি সাহাবি জারির ইবনে আব্দুল্লাহর ভালোবাসার নমুনা

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বেলাদাত উপলক্ষ্যে তাঁর প্রতি বর্তমান সময়ের মুমিন মুসলমানদের ভালোবাসা থাকলেও কাজে তার বাস্তবায়ন একেবারেই কম। সাহাবায়ে কেরামের ভালোবাসাই তার প্রমাণ।

Advertisement

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবেসে ছিলেন হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ। বিশ্বনবির প্রতি কেমন ছিল জারির ইবনে আব্দুল্লাহর ভালোবাসা। যে ভালোবাসায় তিনি ইসলাম গ্রহণ করে সে পথে জীবন পরিচালনা করেছিলেন।

সুরা আহযাবের ২৩ নং আয়াতে তাদের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেছেন-‘মুমিনদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ২৩)

হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ তাদের একজন। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসায় যিনি নিজের প্রতিজ্ঞায় পরিপূর্ণ অবিচল ছিলেন-

Advertisement

হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ একদিন তাঁর গোলামকে একটি ঘোড়া কিনে আনার জন্য পাঠালেন। গোলাম ৩০০ দিরহামে একটি ঘোড়া ক্রয় কিনে বিক্রেতাকে মনিবের ঘরে নিয়ে আসলেন।হজরত জারির ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু ঘোড়াটি দেখে বুঝলেন বিক্রেতা এটির কম দাম চেয়েছে। তিনি বিক্রেতার কাছে জানতে চাইলেন, ‘ঘোড়াটি ৪০০ দিরহাম বিক্রি করবে কিনা? বিক্রেতা তাতে রাজি হলো।হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘ঘোড়ার দাম ৫০০ হলে কেমন হয়? তিনি ঘোড়াটির দাম বৃদ্ধির এ অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখলেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি ঘোড়াটি ৮০০ দিরহাম মূলে কিনে নিলেন।

তারপর হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহর কাছে জানতে চাওয়া হলো, তিনি কেন ঘোড়াটির মূল্য বাড়িয়ে ছিলেন। তিনি বললেন, ‘ঘোড়াটির প্রকৃত দাম সম্পর্কে বিক্রেতার সঠিক ধারণা ছিল না। তাই তিনি ঘোড়াটির সঠিক মূল্য দিয়েছেন। এর কারণ বর্ণনা করে তিনি বলেছিলেন-‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি, আমি সব সময় সব মুসলমান ভাইয়ের কাছে তাদের জন্য অকপট ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে থাকবো।’

হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে করা প্রতিজ্ঞার বিষয়ে আজীবন ছিলেন অটল ও অবিচল। যার ফলে ৩০০ দিরহামে কেনা ঘোড়ার উচিত মূল্য নিজ থেকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে সর্বশেষ ৮০০ দিরহাম পরিশোধ করেছিলেন। এটিই ছিল বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

সুতরাং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মুখে মুখে ভালোবাসা নয়, বরং তার জীবন-দর্শনের আলোকে পরিপূর্ণ অনুসরণ ও অনুকরণ করাই হলো আশেকে রাসুলদের মূল পরিচয়। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসায় কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা হোক মুসলিম উম্মাহর প্রতিজ্ঞা।

Advertisement

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতো উন্নত চরিত্রের অধিকারী করার তাওফিক দান করুন। বিশ্বনবির কথা ও কাজকে অন্তর থেকে ভালোবেসে তার আমলগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম