বিনোদন

শিল্পী সমিতিতে নায়িকা মৌসুমীকে অপমান

দেশের নন্দিত চিত্রনায়িকা প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী শিল্পী সমিতিতে অপমানিত হয়েছেন। আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় বিএফডিসিতে খল অভিনেতা ড্যানিরাজ এই নায়িকার সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে মৌসুমীকে তিনি ধাক্কা মারেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Advertisement

ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত ৮টা অব্দি বিএফডিসিতে উত্তেজনা বিরাজ করে।

আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। নায়িকা মৌসুমী এবার সভাপতি পদে প্রার্থী। সোমবার বিকেলে মৌসুমীকে শুভেচ্ছা জানাতে শিল্পী সমিতিতে আসেন তার কয়েকজন ভক্ত। এসময় শিল্পী সমিতিতে তাদের প্রবেশ নিয়ে ড্যানিরাজ অশালীন ভাষায় চিৎকার চেচামেচি করেন। একপর্যায়ে তিনি মৌসুমীকে ধাক্কাও মারেন।

এসময় ঘটনাস্থলে মিশা সওদাগর, জয়সহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

মৌসুমী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, 'আমি প্রচারণার জন্য এফডিসিতে ছিলাম। আমাকে শুভ কামনা জানাতে আমার এক বড় আপা এবং কয়েকজন ভক্ত ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে এফডিসিতে আসেন। তারা সমিতিতে আমার সাথে সেলফি তুলে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক ওই সময় ড্যানিরাজ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। আমার ভক্তদের সাথে বাজে ব্যবহার করেন। তাদের সামনে আমাকে অপমান করেন। আঙুল তুলে আমাকে বলেন, 'হু আর ইউ?'

তারা চাইছে একটা ঝামেলা বাধাতে। যেন নির্বাচন বানচাল হয়ে যায়। আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াই। এ সময় সভাপতি মিশা সওদাগরও উপস্থিত ছিলেন। তিনি কিছুই বলেননি।

ক্ষোভ নিয়ে মৌসুমী বলেন, 'এতদিন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে একজন শিল্পীর কাছ থেকে এ ধরনের ব্যবহার আশাই করা যায় না।'

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইলিয়াস কোবরা বলেন, 'যে কেউ যে কাউকে শুভেচ্ছা জানাতে আসতেই পারে। কেউ যদি আমাকে এফডিসিতে ফুল দিয়ে নির্বাচনের জন্য শুভেচ্ছা জানাতে আসে আমি মনে করি সেটা আমার জন্য গর্বের ব্যাপার। সেখানে অন্যজন কেন আপত্তি জানাবে বা এ নিয়ে ঝগড়া-অপমান করবে।

Advertisement

ড্যানিরাজের এ আচরণ করার তো কোনো যুক্তিই দেখি না। কারণ সে নির্বাচন করছে না। সে কেন মৌসুমীর মতো অভিনেত্রীকে অপমান করবে? আমার মনে হয় সে মৌসুমীর অপজিট প্যানেলের সমর্থক। তাই এমনটা করেছে। আমি লজ্জিত মৌসুমীর সাথে এমন ঘটনা ঘটায়।

এদিকে মৌসুমীকে ধাক্কা দেয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন সমিতির বর্তমান সভাপতি মিশা সওদাগর। তিনি বলেন, 'এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিছু লোক অনেকক্ষণ ধরে সমিতিতে এসে বসেছিলেন। এটা নিয়েই কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। আমার সামনে কোনো ধাক্কা দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে মৌসুমীকে 'আপনি কে?' এমন প্রশ্ন ড্যানি করেছে। এটা ড্যানির বেয়াদবি। একজন শিল্পীর কাছে এমন আচরণ কাম্য নয়।'

এদিকে জানা গেছে, ঘটনার পর নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন তাৎক্ষণিকভাবে প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেখানে ড্যানিরাজ কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯-২১ মেয়াদের শিল্পী সমিতির আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ অক্টোবর। গত ৫ অক্টোবর। খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। এবার সভাপতি পদে লড়াই করছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও খলনায়ক মিশা সওদাগর। সহ-সভাপতির দুটি পদে প্রার্থী হয়েছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল, রুবেল ও নানা শাহ।

সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রতিদ্বন্দ্বী ইলিয়াস কোবরা। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন আরমান ও সাংকো পাঞ্জা।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অভিনেতা সুব্রত’র বিপরীতে কোনো প্রার্থী নেই। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে লড়ছেন নূর মোহাম্মদ খালেদ আহমেদ ও চিত্রনায়ক ইমন। দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক পদে একাই রয়েছেন জ্যাকি আলমগীর। সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে লড়বেন জাকির হোসেন ও ডন।

কোষাধ্যক্ষ পদে অভিনেতা ফরহাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। অর্থাৎ সুব্রত জ্যাকি আলমগীর এবং ফরহাদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এবারের নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদ সদস্যের ১১টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ১৪ জন। তারা হলেন— অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, আলীরাজ, আফজাল শরীফ, বাপ্পারাজ, রঞ্জিতা, আসিফ ইকবাল, আলেকজান্ডার বো, জেসমিন, জয় চৌধুরী, নাসরিন, মারুফ আকিব ও শামীম খান (চিকন আলী)।

এলএ/এমকেএইচ