আন্তর্জাতিক

দ্বিখণ্ডিত কাশ্মীর : ভারতকে ঠেকানোর হুমকি পাকিস্তানের

ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে নয়াদিল্লির ‘অনৈতিক পদক্ষেপ’ ঠেকাতে সম্ভাব্য সব ধরনের বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে পাকিস্তান। সোমবার ভারতের রাজ্যসভায় কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭-এ ধারা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর এই হুমকি দিলো ইসলামাবাদ।

Advertisement

এর ফলে জম্মু-কাশ্মীর ভেঙে জম্মু ও লাদাখ নামে আলাদা দুটি কেন্দ্রশাসিত রাজ্য হবে। এ দুই রাজ্যে লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিয়োগ দেবে ভারত সরকার।

সোমবার কাশ্মীরের বাসিন্দাদের বিশেষ অধিকারের সুরক্ষা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৫ ধারা বাতিলে নরেন্দ্র মোদি সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তকে অনৈতিক আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। গত কয়েকদিন ধরেই জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তাবাহিনীর অতিরিক্ত প্রায় ২৫ হাজার সেনা মোতায়েন, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ঘিরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।

আরও পড়ুন : দুই ভাগ হলো কাশ্মীর, কী আছে সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীরের উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতির শুরু হয় ভারত সরকার হিন্দুদের অমরনাথ যাত্রা বাতিল করার পর। এছাড়া ওই এলাকা ছাড়তে পর্যটকদেরও নির্দেশ দেয়া হয়। সোমবার দেশটির রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা আইন বাতিলের প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। বিরোধীদের তীব্র বিরোধিতার মুখে ওই আইন পাস হয়।

এ ঘটনার পরপরই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ভারতের নেয়া এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে ভারত সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে, অধিকৃত কাশ্মীর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বিতর্কিত অঞ্চল।

‘ভারত সরকারের একতরফা কোনো পদক্ষেপই বিতর্কিত অঞ্চলের স্ট্যাটাসকে পরিবর্তন করতে পারে না। কারণ এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ভারত অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের জনগণ মেনে নেবে না।’

আরও পড়ুন : মেহবুবা মুফতিকে কারাগারে পাঠানোর আহ্বান শিব সেনার

Advertisement

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক এই বিবাদের একটি পক্ষ হিসেবে ভারতের নেয়া অবৈধ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পাকিস্তান।’ কাশ্মীরি জনগণের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থনের কথা ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছেন, ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) যদি মনে করে যে, তাদের সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ, তাহলে তারা প্রেসিডেন্টের আদেশের মাধ্যমে গভর্নর শাসিত আইন জারি কিংবা এটি নিয়ে রাজনীতি করতো না।

‘যদি তারা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং লাদাখকে পৃথক দুটি অঞ্চল করে, তাহলে এতে প্রমাণিত হয় যে, তারা আশা হারিয়েছে... আজ ভারত আবারও আন্তর্জাতিক বিশ্বের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একটি বিতর্কিত ইস্যুকে পুনরুজ্জীবিত করলো। এতে সমস্যার সমাধান হবে না, বরং উত্তেজনা বাড়বে। তারা এটিকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। সময়ই বলবে, ভারত এটি নিয়ে কী ধরনের বিপজ্জনক খেলা খেললো।’

সূত্র : ডন।

এসআইএস/এমকেএইচ