জাতীয়

গরুকে ইনজেকশন দিলেই হানা দেবেন ম্যাজিস্ট্রেট

>> ঢাকা উত্তর-দক্ষিণে এবার বসছে ২৪ পশুর হাট>> রাজধানীর প্রতিটি পশুর হাটে থাকবেন ম্যাজিস্ট্রেট

Advertisement

কোরবানি ঈদ সামনে রেখে প্রতি বছরই পশুর হাটে স্টেরয়েডের মতো ইনজেকশন দিয়ে পশুকে ফোলানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। এ স্টেরয়েড পশু এবং পশুর মাংস গ্রহণকারী মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্ষতিকারক এ স্টেরয়েডের ব্যবহার বন্ধে এবার নজরদারি করবেন ম্যাজিস্ট্রেট। শুধু তাই নয়; পশুর পাইকার কিংবা ক্রেতারা যাতে হাটে কোনোভাবে প্রতারিত না হন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ঢাকার পশুর হাটগুলোতে বেশ কয়েকটি সংস্থার ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এবার পশুর হাটে র‌্যাব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), ঢাকা জেলা পরিষদ, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নজরদারি করবেন। এ ছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএনের সহযোগিতায় হাটগুলোতে থাকবেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তাদের অভিযান পরিচালনা করবেন অধিদফতরের সহকারী পরিচালকরা।

র‌্যাব ও পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাজধানীর প্রতিটি হাটে তাদের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কোনো অনিয়ম দেখলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সেগুলো তুলে ধরবেন। কোনো ইজারাদার ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত হাসিল নিচ্ছে কি না, জোর করে এক হাটের পশু অন্য হাটে নামানো হচ্ছে কি না, হাটে অননুমোদিত কোনো হকার আছে কি না, হাটের চৌহদ্দির বাইরে কোনো পশু নামানো হলো কি না? এ ছাড়া পশু মোটা করার জন্য ক্ষতিকারক কিছু খাওয়ানো হচ্ছে কি না-সে বিষয়টিও নজরে রাখা হবে।

Advertisement

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছর গাবতলীর হাটে আমরা বেশ কয়েকটি গরু দেখেছি যেগুলো ক্ষতিকারক স্টেরয়েড ইনজেকশন দিয়ে মোটা করা হয়েছে। এ অপরাধে একজন ভুয়া চিকিৎসক ও দু’জন গরু ব্যবসায়ীকে সাজাও দেয়া হয়েছে। স্টেরয়েডের মতো মারাত্মক হরমোনের ক্ষমতার পশুর চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি। ফলে পশুর দেহে অতিরিক্ত পানি জমে শরীর দ্রুত ফুলে ওঠে। স্টেরয়েড ব্যবহৃত মাংস খেলে মানুষের কিডনি, লিভার, অন্ধত্ব, পুরুষত্বহীনতা ও ক্যান্সারসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঙ্গে রোগ সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। তাই জনগণের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা এবারও বিভিন্ন হাটে থেকে এগুলো নজরদারি করব।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জাগো নিউজকে বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাটের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, ভোক্তাদের বিভিন্ন রকম প্রতারণার হাত থেকে সুরক্ষা এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানি থেকে সুরক্ষা দিতে কোরবানির পশুর হাটে কাজ করবে অধিদফতর।’

এপিবিএন সদস্যদের সহযোগিতায় পশুর হাটে জাল নোটের প্রতারণা ও পশুর শরীরে স্টেরয়েড কিংবা অন্যান্য ক্ষতিকারক উপাদান পাওয়া গেলে সে বিষয়েও হস্তক্ষেপ করা হবে বলে জানান শাহরিয়ার।

রাজধানীর দুই সিটিতে পশু বেচাকেনায় বসছে ২৪ হাট

Advertisement

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এবার কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য ২৪টি হাট বসছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ১৪টি। সেগুলো হলো- উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ঝিগাতলা-হাজারীবাগসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামসাবাদ মাঠসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, শনিরআখড়া ও দনিয়া মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারটেক মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দাওকান্ডি ইন্দুলিয়া ভাগাপুর নগর (আফতাব নগর ইস্টার্ন হাউজিং মেরাদিয়া মৌজার সেকশন-১ ও ২) লোহারপুলের পূর্ব অংশ এবং খোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা ও আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার হাটগুলো হলো উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ ও ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমের ফাঁকা জায়গা; ভাটারা (সাঈদ নগর) পশুর হাট; ঢাকা পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের খেলার মাঠ; মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়কসংলগ্ন (বছিলা) পুলিশ লাইনসের খালি জায়গা; মিরপুর সেকশন-৬, ওয়ার্ড-৬ (ইস্টার্ন হাউজিং)-এর খালি জায়গা; মিরপুর ডিওএইচএস সংলগ্ন উত্তর পাশের সেতু প্রপার্টি ও সংলগ্ন খালি জায়গা; বাড্ডার ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর) ব্লক-ই সেকশন-৩-এর খালি জায়গা; কাওলা-শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা ও ভাষানটেক রাস্তার নির্মাণাধীন অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অংশ এবং পাশের খালি জায়গায়।

এআর/এনডিএস/এমকেএইচ