আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা যৌনকর্মী বাড়ছে

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার হার ক্রমশ বাড়ছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে দেশীয় দালাল চক্র। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ সারাদেশে সক্রিয় এ চক্রটি।

Advertisement

গত জুন মাসে কক্সবাজার থেকে পাচারের সময় অন্তত ২১ জন নারীকে উদ্ধার করা হয়। মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি দেয়ার কথা বলে পাচার করা হচ্ছিল তাদের। এর আগে ১৪মে উদ্ধার করা হয় ১৭ জন নারীকে। তাদের দলে ১৬ জন শিশু ও একজন পুরুষও ছিলেন। উদ্ধারের পর তাদের ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়। শুধু কক্সবাজার নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকা থেকেও রোহিঙ্গা নারীদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

গত ২০ জুলাই রাজধানী ঢাকা থেকে দুই রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধার করে র্যাব। এ সময় দালাল চক্রের সদস্যদেরও আটক করা হয়। ওই দুই নারীকে বাংলাদেশি পাসপোর্টের মাধ্যমে বিদেশে পাচারের চেষ্টা করছিল দালাররা।

আরও পড়ুন : ক্লাসে শিক্ষক শেখালেন কীভাবে ধর্ষণ করতে হয়, ছাত্রী আহত

Advertisement

কক্সবাজারে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করে নোঙর নামে একটি স্থানীয় এনজিও। তারা এইচআইভি নিয়ে কাজ করলেও রোহিঙ্গা নারীদের যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক দিদারুল আলম রাশেদ বলেন, স্থানীয় দালাল চক্র ছাড়াও আগেই বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের অনেকে এ গোষ্ঠীটির নারীদের নানা উপায়ে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করছে। হতদরিদ্র অবস্থার সুযোগ নিয়ে এ কাজ করছে তারা।

তিনি বলেন, চাকরির নামে বিদেশে যাদের পাচার করা হয় তাদের আসলে যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত করা হয়। পাচারের সময় অনেক রোহিঙ্গা নারী উদ্ধার করা হয়েছে। আর এ থেকেই বোঝা যায় যে, কি পরিমাণ রোহিঙ্গ নারী পাচার হয়েছে। চাকরি ছাড়ায়ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রোহিঙ্গা নারীদের যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত করা হয়। অনেক রোহিঙ্গা নারী এখানে আসার পর ক্যাম্পের বাইরে থেকেই তাদের যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। তাদের শুধু কক্সবাজার এলাকায় নয়, দেশের অন্যান্য এলাকায় পরিচয় পাল্টে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে।

ঠিক কতজন রোহিঙ্গা নারী যৌন ব্যবসায় জড়িয়েছে তা সঠিকভাবে বলা না গেলেও তাদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে জানান তিনি। দিদারুল আলম বলেন, বাড়ার কারণ হলো রোহিঙ্গা ক্যাম্প সুরক্ষিত নয়। আর ক্যাম্পের মধ্যেই যৌন ব্যবসার দালালদের নেটওয়ার্ক।

আরও পড়ুন : কাশ্মীরে হঠাৎ উত্তেজনা, ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ

Advertisement

কক্সবাজার এলাকার হোটেল ছাড়াও দালালরা যৌন ব্যবসার জন্য বাসা ও বিভিন্ন রেস্ট হাউজও ব্যবহার করে। তবে, রোহিঙ্গা নারীদের যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য নেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।

কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন দাবি করেন, রোহিঙ্গা নারীরা যে যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে ক্যাম্পের ভেতরে তারা যৌন হয়রানির শিকার হন এমন অভিযোগ আমরা পাই। যৌন ব্যবসার ব্যাপারে পুলিশের নজরদারি আছে বলে জানান তিনি।

কক্সবাজার জেলা সমাজ সেবা দফতরের উপপরিচালক প্রীতম চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা নারীরা যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন এমন তথ্য এবং অভিযোগ আমরা শুনি। তবে আমরা ক্যাম্পের শিশুদের নিয়ে কাজ করি, নারীদের নিয়ে নয়। ডিডব্লিউ।

এসআইএস/এমএস