জাতীয়

পাহাড় ধসে দুই মৃত্যু : কর্ণফুলীর এমডিকে দায়ী করলেন ডিসি

রাঙ্গামাটিতে শুক্রবার (৫ জুলাই) বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৪ মিলিমিটার। পরদিন ৬৭ মিলিমিটার, ৭ জুলাই হয়েছে ১৭০ মিলিমিটার। অর্থাৎ দুইদিন ভারী এবং একদিন অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে জেলাটিতে। গতকাল সোমবারও বৃষ্টিপাত হয়েছে।

Advertisement

বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে যায়। ভূমিধসের আশঙ্কা থাকে। শনিবার (৬ জুলাই) থেকে আবহাওয়া অধিদফতর সতর্কবার্তা দিয়ে আসছে, ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাঙ্গামাটিসহ চট্টগ্রাম বিভাগে ভূমিধস হতে পারে। গতকাল সোমবারও এ সতর্কবার্তা ছিল।

অথচ সোমবার জাগো নিউজের রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার মালি কলোনির পাহাড়ের পাদদেশে থাকা দুটি ঘরের ওপর পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে উজ্জ্বল মল্লিক (৩) ও তাহমিনা বেগম (২৫) নামে দুইজনের মৃত্যু হয়।

ভূমিধসের সতর্কবার্তা থাকা সত্ত্বেও দুজনের মৃত্যু হলো। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে জনসাধারণকে সরিয়ে নিতে কিংবা সচেতন করতে রাঙ্গামাটি জেলা কর্তৃপক্ষ কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বা নিয়েছেন তা জানতে কথা হয় রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম মামুনুর রশিদের সঙ্গে।

Advertisement

তার দাবি, কর্ণফুলী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ মৃত্যুর জন্য দায়ী। এটি পাহাড় ধস না বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে মামুনুর রশিদের ভাষ্য, ‘আমাদের এখানে তো মরে নাই, মরছে কর্ণফুলীর কলোনিতে। কর্ণফুলী পেপার মিলে দুটা বাসা ভেঙে পড়ছে। ওইটা পাহাড় ধস না ঠিক। কর্ণফুলীর এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) এটার জন্য দায়ী।‘

রাঙ্গামাটির এ জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘আমি বহুত পদক্ষেপ নিছি। এখন আমি ফিল্ডে আছি। আমি নিজে সবাইকে ঘরে ঘরে গিয়ে সবাইকে নিয়ে যাচ্ছি। মাইকিং করলে মানুষ যায় না। মানুষ তো নিজের ঘরে থাকতে চায়। মানুষকে জোর করে বের করছি। আমরা সব লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে গেছি। আমাদের এখানে পরিস্থিতি ভালো।’

প্রতি বছরই বর্ষাকালে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ বছরও ঘটল পাহাড় ধসে মৃত্যুর ঘটনা।

Advertisement

সোমবার ভূমিধসের সতর্কবার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে সোমবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে। অতিভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

দেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। এর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে দেশে। ভূমিধসের মতো চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আজ রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের নদীবন্দরকেও এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

পিডি/এসআর/এমকেএইচ