দেশজুড়ে

১০০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলাম, ঘুষ খাব না কথা দিলাম

কোনো ধরনের ঘুষ বা অনৈতিক সুবিধা ছাড়াই পুলিশে নিয়োগের যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল তার বাস্তবায়ন করলেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে টাঙ্গাইল জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে ১৩৬ জনকে চাকরি দিয়ে দৃষ্টান্ত দেখালেন তিনি।

Advertisement

গত ১ জুলাই এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে বিভিন্ন ধাপে শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে সর্বশেষে ৭ জুলাই যোগ্য এবং মেধাবী প্রার্থীদের নির্বাচিত করা হয়।

নির্বাচিত ১৩৬ জনের মধ্যে সাধারণ পুরুষ ৮১ জন, সাধারণ নারী ২৭ জন, পুরুষ মুক্তি ১৫ জন, নারী মুক্তি পাঁচজন, পুলিশ পোষ্য পুরুষ পাঁচজন, পুলিশ পোষ্য নারী একজন ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পুরুষ দুইজন।

এবার চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই হতদরিদ্র ও দিনমজুরের সন্তান। তাদের একজন রুনা। জানতে চাইলে রুনা বলেন, আমার বাবা ভ্যানচালক। তিনি ভ্যান চালিয়ে এবং মাঝেমধ্যে স্থানীয় বাজারে কলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আমার মা অভিরন বেগম আগে অন্যের বাসায় কাজ করতেন। বর্তমানে কিছুটা অসুস্থ হওয়ায় কাজ করতে পারেন না।

Advertisement

রুনা বলেন, ১০০ টাকায় পুলিশে চাকরি হবে তা জীবনে কল্পনাও করতে পারিনি। ভ্যানচালকের মেয়ে বলে টাকার অভাবে লেখাপড়া করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।

কথা বলতে বলতে চোখে পানি চলে আসে রুনার। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, চাকরিটা আমার খুব দরকার ছিল। চাকরি পেয়ে আমি অনেক খুশি। পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় এবং বাবা-মা অসুস্থ হওয়ায় পরিবারের দেখাশোনা ও ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে চাই আমি। সৎভাবে চাকরি করে দেশ ও জনগণের সেবা করতে চাই। কথা দিলাম ঘুষ খাব না, অসৎপথে যাব না। ১০০ টাকায় চাকরি পাওয়ায় পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই আমি।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের উদ্দেশ্যে এক মাস আগ থেকে প্রচার-প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার টাঙানোর ব্যবস্থা করা হয়। এবার আর্থিক লেনদেনসহ সব অনিয়ম ও সুপারিশ পরিহার করে সুষ্ঠুভাবে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। শতভাগ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরে খুব ভালো লাগছে আমার।

এএম/জেআইএম

Advertisement