আন্তর্জাতিক

জরুরি বৈঠকে বসছে পরমাণু চুক্তির আওতাধীন দেশগুলো

ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলো জরুরি বৈঠকে বসতে পারে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মাত্র একদিন আগেই ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধের মাত্রা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তারপরেই নিজেদের মধ্যে বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছে পরমাণু চুক্তির আওতাধীন দেশগুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ফেডেরিকা মোগেরিনির মুখপাত্র মায়া কাসিয়ানচিচ রোববার ভিয়েনায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

Advertisement

তিনি বলেন, পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষকারী দেশগুলো জরুরি বৈঠকে বসার বিষয়টি বিবেচনা করছে। এর কারণ হিসেবে ইরানের পক্ষ থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানোর ঘোষণার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইরানের এমন ঘোষণায় এসব দেশে ‘গভীর উদ্বেগ’ তৈরি হয়েছে।

গত বছর পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্তিতে নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়ানোর উপায় বের করতে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ৬০ দিনের সময় বেধে দিয়েছিল ইরান। কিন্তু ওই সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি ইউরোপীয় দেশগুলো। এর মধ্যেই ইরানের তরফ থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধের মাত্রা বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে।

ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং ইউরোপের পক্ষ থেকে এটি বাস্তবায়নে গড়িমসি করার বিষয়টি অনেকটা চেপে গেছেন কাসিয়ানচিচ। সে বিষয়ে কোন কিছু উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ইরানের নতুন ঘোষণার পর আসন্ন জরুরি বৈঠকে পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী অবশিষ্ট দেশগুলো তাদের করণীয় নির্ধারণ করবে।

Advertisement

ইরান গত চার বছর ধরে পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করলেও ২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে অন্যায়ভাবে বেরিয়ে যায়। এরপর ইউরোপ ইরানকে এ সমঝোতা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও তা পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।

পশ্চিমা দেশগুলোর এমন আচরণের প্রতিক্রিয়ায় ইরান গত ৮ মে ইউরোপীয় দেশগুলো ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বলেছিল, এ সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। তা না হলে তেহরান এ সমঝোতায় নিজের দেয়া কিছু প্রতিশ্রুতি পালন স্থগিত রাখবে।

তেহরানের দেয়া সে সময়সীমা গতকাল ৭ জুলাই শেষ হওয়ার পর ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফ অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ফেডেরিকা মোগেরিনিকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, তার দেশ এখনো যে কোনো সময় আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে এবং ইউরোপীয়রা তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করলে ইরানও আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।

টিটিএন/পিআর

Advertisement