আজ আওয়ামী লীগের যে সব নেতা জাসদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অপবাদ দিচ্ছেন তাদের আগে নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
Advertisement
সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে সদ্যপ্রয়াত জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন খানের শোক সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
ইনু বলেন, ‘৬০ দশকে ছাত্রলীগের কারা খন্দকার মোশতাকের অনুসারী ছিল, ৬০ দশকে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে সিরাজুল আলম খান-আব্দুর রাজ্জাক-কাজী আরেফের নেতৃত্বাধীন নিউক্লিয়াসের পরিচালনায় স্বাধীনতার লক্ষ্যে আপসহীন বিপ্লবী সংগ্রামের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কারা পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ওকালতি করতেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কারা খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল, কারা অস্ত্র নিয়ে ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নামের আগে বঙ্গবন্ধু না লিখতে হুমকি দিয়েছিল, কারা জিয়ার আনুকূল্যে ডলার/পাউন্ডের ব্যবসা করে কোটিপতি হয়ে এখন বড় বড় নীতি কথা বলে, তা দেশবাসী জানে। আওয়ামী লীগের কারা ১/১১ পরবর্তীতে শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিল, শেখ হাসিনা কাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘I have forgiven but not forgotten’, তাও দেশবাসী জানে।
তিনি বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগ ও জাসদসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির রাজনৈতিক ঐক্যের সাফল্যের ওপরই শেখ হাসিনার সরকার দাঁড়িয়ে আছে, বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গিবাদ বিপর্যস্ত হয়েছে। সুতরাং যারা এখন পরিকল্পিতভাবে জাসদের বিরুদ্ধে বিষদগারে নেমেছে তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির রাজনৈতিক ঐক্য নস্যাৎ করতে চাইছে।’
Advertisement
জাসদ সভাপতি বলেন, ‘জাসদ সংগ্রাম করে, ষড়যন্ত্র করে না। রাজনৈতিক আদর্শ ও নীতির প্রশ্নেই জাসদ বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছিল, জাসদ কখনোই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেনি। তাই জাসদ বঙ্গবন্ধু সরকারের রাজনৈতিক বিরোধিতা করলেও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে হাত মেলায়নি, আপস করেনি। বরং জাসদ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলে।’
তিনি বলেন, খন্দকার মোশতাকের ৮৩ দিনের শাসনে কয়েকশত জাসদ কর্মী নিহত-নির্যাতিত হন, জাসদ নেতা-কর্মীদের ঠিকানা হয় কারাগার। জাসদ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সুফলভোগী না, বরং যারা আজ জাসদকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অপবাদ দিচ্ছেন তাদের অনেকেই বঙ্গবন্ধু হত্যার সুফলভোগী।
ইনু বলেন, ‘গৃহস্থালি সংযোগসহ সব ধরনের সংযোগ ও ব্যবহারে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাপন ব্যয় বৃদ্ধি করবে।’ গ্যাস খাতের সংস্কার না করা, দুর্নীতি ও অপচয় এবং এলএনজি আমদানিতে বাড়তি মূল্য দেয়ার দায় সাধারণ মানুষের ওপর না চাপানোর জন্য সরকারে প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর জাসদের সমন্বয়ক মীর হোসাইন আখতারের সভাপতিত্বে শোক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, সহ-সভাপতি আফরোজা হক রীনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, নুরুল আখতার, নাদের চৌধুরী, সহ-সভাপতি শফি উদ্দিন মোল্লা, শহীদুল ইসলাম, ফজলুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু, শওকত রায়হান, রোকনুজ্জামান রোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুন্নবী, মীর্জা মো. আনোয়ারুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সভাপতি ইদ্রিস ব্যাপারী, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, জাতীয় কৃষক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন কাওসার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি আহসান হাবীব শামীম প্রমুখ।
Advertisement
এইউএ/এনডিএস/জেআইএম