জাতীয়

রোগী সেজে চেম্বারে ম্যাজিস্ট্রেট, ধরা এইচএসসি পাস ডাক্তার

পড়ালেখা উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পর্যন্ত। নিজেকে পরিচয় দেন কলকাতা থেকে এমবিবিএস পাস ডাক্তার হিসেবে। পথের ধারে ভুয়া মেডিসিন সেন্টারে চেম্বার খুলে দাবি করেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মেডিকেল অফিসার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি প্রতারক বিকিরণ বড়ুয়ার (৪০)।

Advertisement

আরও পড়ুন >> তিনি এইচএসসি পাস, রোগী দেখেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে

জেলা প্রশাসনের পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান নিজেই রোগী সেজে হাজির হন চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গার আয়েশা মেডিকেল নামের একটি ফার্মেসিতে। হাতেনাতে উদঘাটন করেন ভয়ঙ্কর প্রতারণার গোমর।

গতকাল সোমবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গার আয়েশা মেডিকেল নামের ওই ফার্মেসিতে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। সহায়তায় ছিলেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় ও র‌্যাব সদস্যরা।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মিথ্যা পরিচয়ে চিকিৎসা পেসা পরিচালনার দায়ে বিকিরণ বড়ুয়া নামের ওই ভুয়া ডাক্তারকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সময় আয়েশা মেডিকেল নামের ওই ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ বিক্রির দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রতারণায় জড়িত থাকার দায়ে ফার্মেসি মালিক ফরিদুল আলমকে তিন মাসের কারাদণ্ডও দেয়া হয়।

আরও পড়ুন >> গ্যালাক্সি হসপিটালে রোগী দেখেন দুই ভুয়া এমবিবিএস

অভিযান প্রসঙ্গে র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মিমতানুর রহমান বলেন, কিছুদিন আগে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা রোগী সেজে ওই ভুয়া ডাক্তারের প্রতারণা ধরেন। পরে বিষয়টি নিয়ে যৌথ অভিযানে নামে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও র‌্যাব। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় র‌্যাবের এক সদস্যের মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জেলা প্রশাসনের পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান নিজেই রোগী সেজে আয়শা মেডিকেলে ভুয়া ডাক্তার বিকিরণের চেম্বারে যান।

এ প্রসঙ্গে তাহমিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি যখন ওই ডাক্তারের চেম্বারে যাই তখন সেখানে ৩০-৪০ জন রোগী ছিল, যার মধ্যে গর্ভবতী নারী এবং শিশুও ছিল। অপেক্ষমাণ এত রোগী চট্টগ্রাম শহরের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারেও দেখা যায় না। এ সময় বিকিরণের কাছে তার পড়ালেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে এমবিবিএস পাস এবং কাস্টমসের মেডিকেল অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন।

Advertisement

আরও পড়ুন >> এসএসসি পাস না করেই তিনি এমবিবিএস ডাক্তার

এমবিবিএস ডিগ্রি ভারতের কলকাতার একটি মেডিকেল কলেজ থেকে নেয়ার কথা বললেও প্রকৃত সনদ দেখাতে পারেননি। তবে বাংলাদেশ থেকে এইচএসসি পাসের সনদ তিনি দেখিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বিকিরণ দাবি করেন, তার বিএমডিসি নিবন্ধন আছে। নম্বর- ৯১১১৩। তবে আমাদের সঙ্গে থাকা সিভিল সার্জন অফিসের চিকিৎসক ওয়াজেদ চৌধুরী অভি ওয়েবসাইটে খুঁজে ওই নম্বরে বিকিরণের নাম পাননি। কাস্টম হাউসে যোগাযোগ করেও সেখানে কর্মরত থাকার তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।’

আরও পড়ুন >> ভুয়া সনদেই লাখ টাকা বেতন নেন ‘চিকিৎসক’

চিকিৎসক না হয়েও প্রতারণার জন্য তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ভেজাল ও অনুমোদনহীন বিভিন্ন ওষুধ বিক্রির অপরাধে বিকিরণ যে ফার্মেসিতে চেম্বার খুলেছিলেন, তার মালিক ফরিদুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে- যোগ করেন তিনি।

আবু আজাদ/এমএআর/পিআর