চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) ৩৭৭৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এ আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। সোমবার (১০ জুন) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
Advertisement
রফতানিকারকরা বলছেন, রফতানি আয়ে সুখবর নিয়েই অর্থবছর শুরু হয়েছিল। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। এর মূল কারণ, দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক রফতানিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি। এছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে অন্যান্য খাতেরও আয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ফলে রফতানিতে বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে।
তাদের প্রত্যাশা, বছরের পরবর্তী মাসগুলোতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। আর ইতিবাচক এ ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। এ সময়ে আয় হয়েছে তিন হাজার ৭৭৫ কোটি ৬ লাখ মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের একই সমেয়ের তুলনায় রফতানি এ বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১১ মাসে রফতানি আয় ছিল তিন হাজার ৩৭২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।
Advertisement
প্রতিবেদনে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে চলতি বছরের মে মাসে রফতানি আয় হয়েছে ৩৮১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। যা লক্ষ্য ছিল ৩৪৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় মে মাসে রফতানি আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত বছরের মে মাসে এ আয় হয়েছিল ৩৩২ কোটি ডলার। এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে মোট রফতানি আয়ে পোশাকের অবদান ৮৪ শতাংশের বেশি। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্যান্য রফতানির উপখাত হিসাব করলে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৯ শতাংশেরও বেশি হবে।
আলোচিত সময়ে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি আয় এসেছে ৩ হাজার ১৭৩ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি এ বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে পোশাক খাতে রফতানি আয় ছিল ২ হাজার ৮১২ কোটি ডলার।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে বড় খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় কৃষিপণ্য রফতানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ৮৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ।
Advertisement
প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ২৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ খাতে আয় হয়েছে ১১ কোটি ২৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
এদিকে আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে। একই সঙ্গে অর্জন হয়নি লক্ষ্যমাত্রাও। পাট ও পাটজাত খাত থেকে মে মাস শেষে রফতানি আয় এসেছে ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম। এছাড়া চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে ৯৪ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ। প্রবৃদ্ধিও গত বছরের চেয়ে ৭ দশমকি ৪৯ শতাংশ কমেছে।
এসআই/আরএস/পিআর