জাতীয়

বেচাবিক্রি নেই চাঁদনী চকে

‘এবারের লাভ দিয়ে কর্মচারীদের বেতন-বোনাস হবে না। কীভাবে ব্যবসা চালাব সেটাই ভাবছি। গত ১০ বছরের মধ্যে এত খারাপ বেচাকেনা আর কখনোই হয়নি। মোকামে কাপড়ের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তাতে আমাদের দাম চাইতেই খারাপ লাগে। যে থ্রি পিচ গত বছর এক থেকে দেড় হাজার টাকা বিক্রি করেছি সেই থ্রি পিচ এখন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বিক্রি করতে হয়।’

Advertisement

কথাগুলো বলছিলেন চাঁদনী চক মাকেটের ‘লিবাস শো-রুম’ এর সিনিয়র কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ফিরোজ। এবারের ঈদে তাদের ব্যবসা কেমন? সাংবাদিক হিসেবে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এই কথাগুলো বলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এই শো-রুমে ২৭ জন কর্মচারী-কর্মকর্তা আছে। তাদের মধ্যে সর্বনিম্ন বেতন ১২ হাজার টাকা। তার মধ্যে এ মাসে গুনতে হবে বোনাস। আজ (গতকাল) ২৫ রমজান। তার ওপর শেষ জুম্মাবার। এখন পর্যন্ত যে বেচাকেনা তাতে আমরা হতাশ।’

তিনি বলেন, ‘কেমিক্যালের কারখানা বন্ধ করার জন্য কাপড়ের রং ও অন্যান্য খরচ বেড়েছে বলে তারা কাপড়ের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছর যে থ্রি পিস এক থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করেছি সেই থ্রি পিস এখন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বিক্রি করতে হয়। দাম শুনলেই কাস্টমাররা দৌড়ে পালায়। নরসিংদী ও বাবুরহাট হলো আমাদের মূল মোকাম। সেই মোকামেই কাপড়ের দাম বেশি করেছে। যে কারণে ভরা ঈদ মৌসুমেও আমরা ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।’

Advertisement

ফরহাদ হোসেন ফিরোজের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন পাশেই আরেক কর্মচারীর সঙ্গে বার্গেনিং করছিলেন একজন মহিলা। মোহাম্মদপুর থেকে আসা সেই মহিলা বলেই বসলেন, ‘এবার আপনারা দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন।’ তিনি কাপড় না কিনেই বের হয়ে গেলেন। এ সময় ফিরোজ বলেন, ‘এই দেখেন, ওই মহিলা আমাদের পরিচিত। গত বছর প্রায় ২০টি থ্রি পিস কিনেছেন আমাদের শো-রুম থেকে। এবার কাপড় না নিয়েই চলে গেলেন দাম বেশির অজুহাতে।’

পাশের শো-রুম ‘নিউ হ্যাভেন ফ্যাশন’। এ শো-রুমের কর্মচারী মো. রফিকুল বললেন, ‘বেচাবিক্রি এত খারাপ যে পার্টি বিদায় করতে পারছি না। আমাদের শো-রুম ফিক্সড প্রাইজের। তারপরও বিক্রি বাড়ানোর জন্য ১০ থেকে ১৫ ভাগ কমিশন দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাস্টমার পাচ্ছি না।’

‘গত বছরও এমন সময় জমজমাট ব্যবসা ছিল। রমজান প্রায় শেষ এখনো ঈদের বেচাকেনা শুরুই করতে পারলাম না’-হতাশার সুরে বললেন তিনি।

এ মাকেটের ‘রফিক টেক্সটাইল’, ‘ফয়সাল টেক্সটাইল’, ‘শাহানুর ফ্রেব্রিক্স’ এর শো-রুমেও কর্মচারী-কর্মকর্তাদের একই বক্তব্য, ‘এবার ব্যবসা নেই’।

Advertisement

চাঁদনী চক মাকেটের ‘আলমগীর ওড়না হাউস’ এর কর্মচারী রশিদ আহমেদ এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিবেদককে বলেন, ‘এবার যে ঈদ মার্কেট যাচ্ছে এটা টেরই পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন।’

এফএইচএস/এসআর/জেআইএম