জাতীয়

এমডিকে ‘ওয়াসার সুপেয় পানির’ শরবত খাওয়াবেন জুরাইনবাসী

ঢাকা ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়- গত ২০ এপ্রিল সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পুরান ঢাকার জুরাইনবাসী। মন্তব্যের প্রতিবাদে আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তারা কারওয়ানবাজারে অবস্থিত সংস্থাটির ভবনে গিয়ে ওয়াসার পানির শরবত বানিয়ে এমডিকে খাওয়ানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

Advertisement

পূর্ব জুরাইনের দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। সোমবার দুপুরে গণমাধ্যমে এ কর্মসূচির বার্তা পাঠান মিজানুর রহমান নামে জুরাইন এলাকার এক বাসিন্দা।

মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এলাকার পানি খুবই খারাপ, দুর্গন্ধ ও ড্রেনের পানির মতো। ২০১২ সালে আমরা জুরাইনের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর নিয়ে ওয়াসার এমডি বরাবর একটি অভিযোগ করেছিলাম। সেই অভিযোগে কোনো কাজ হয়নি। এখনো প্রতিদিন ময়লা পানি আসে। আমরা কয়েক বছর ধরে ওয়াসার পানি শুধুমাত্র গোসল, কাপড় ও বাসনকোসন ধোয়ার জন্য ব্যবহার করছি। খাওয়ার জন্য মসজিদের টিউবওয়েলের পানি কিনে খাচ্ছি। প্রতি ১০ লিটার পানির জন্য ২ টাকা দিতে হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কী মনে করে পানিকে শতভাগ সুপেয় বললেন. তা আমাদের বোধগম্য হয়নি।’

আরও পড়ুন> টিআইবির প্রতিবেদন ‘নিম্নমানের’ ‘ঢালাও’ ‘স্ট্যান্টবাজি’ : ওয়াসা

Advertisement

কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা একসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আনতে যাই, তাদের অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ কর্মসূচি দিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা আগামীকাল ওয়াসা ভবনে গিয়ে এমডির জন্য ওয়াসার বিভিন্ন কলের পানি নিয়ে যাব। যদি তার ডায়াবেটিস থাকে তাহলে শুধু লেবু দিয়ে শরবত তৈরি করে খাওয়াব। তিনি খেয়ে বলবেন, পানি কতটুকু সুপেয়।’

গত ১৭ এপ্রিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পক্ষ থেকে ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে ওয়াসায় অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে টিআইবি।

আরও পড়ুন> ওয়াসার পানি পানে অসুস্থ হলে এমডি কি দায়ভার নেবেন?

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে বা সিদ্ধ করে পান করে। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতি বছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।

Advertisement

এ প্রতিবেদনের প্রতিবাদে শনিবার (২০ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলন করে ওয়াসার এমডি তাকসিম খান বলেন, ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ। একে ফুটিয়ে খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।’ এছাড়াও টিআইবির এই প্রতিবেদনকে তিনি নিম্নমানের বলে উল্লেখ করেন।

এআর/এমএসএইচ/পিআর