দেশজুড়ে

নুসরাত হত্যাকাণ্ড : হাফেজ কাদেরের কক্ষে হয় পরিকল্পনা

মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুন দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার এজহারভুক্ত আসামি হাফেজ আবদুল কাদের। বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির হয়ে এ জবানবন্দি দেন।

Advertisement

পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জানান, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি হাফেজ আবদুল কাদের। সকাল ১১টা থেকে জবানবন্দি রেকর্ড শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেষ হয়। হাফেজ আবদুল কাদের আদালতের কাছে স্বীকার করেছে সে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। ঘটনার দিন সে হত্যাকারীদের নিরাপত্তায় মাদরাসার গেট পাহারায় ছিল। এবং পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম। এবং নিজের সক্রিয় অংশ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। তার কক্ষেই হয়েছে পরিককল্পনা।

হাফেজ আবদুল কাদের ওই মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক ও ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মঙ্গলবার রাতে তাকে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনের জবানবন্দি আদলত রেকর্ড করেছে। এদের সবাই আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

Advertisement

এর আগে, গত ১৪ এপ্রিল রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামিম। ১৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে জবানবন্দি দেন আবদুর রহিম ওরফে শরীফ।

আলোচিত এ মামলা এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।

এর আগে টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১০ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকেলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

রাশেদুল হাসান/বিএ

Advertisement