আইন-আদালত

রমনায় বোমা হামলা : একজনের ফাঁসি কার্যকর, ৩ জন জেলে বাকিরা পলাতক

ঐতিহ্যবাহী রমনার বটমূলে বর্ষবরণ উৎসবে বোমা হামলা ঘটনার এখনও বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল করার পর হাইকোর্টে শুনানির জন্য রয়েছে। তবে এ মামলার আসামিদের মধ্যে ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। একই রায়ে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে আরও তিনজন কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া আসামিদের মধ্যে বাকিরা পালাতক।

Advertisement

২০০১ সালে রমনার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার স্থানেই ৯ জন নিহত ও ২০ জন গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনায় দায়ের করা দুটি পৃথক মামলার মধ্যে হত্যা মামলার রায় হয় প্রায় ১৩ বছর (২০১৪ সালের ২৩ জুন) পর। রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। মামলায় সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ চার আসামি এখনও পলাতক।

তবে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হাইকোর্টে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবীনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মামলাটি কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, ২০১৪ সালের বিচারিক আদালতের রায় ঘোষণার পরে মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে আসামিদের পক্ষ থেকেও জেল আপিল হয়। পরে পেপারবুক প্রস্তুত করে মামলাটি হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে ছিল। ওই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হওয়ায় বর্তমান কোর্টের কার্যতালিকায় আসে মামলাটি।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, মামলাটি গত বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) কার্যতালিকার ২৪ নম্বর ছিল। আশা করছি, অচিরেই মামলাটির শুনানি শুরু হবে। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ প্রস্তুত আছি।

গুরুত্বপূর্ণ এ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুফতি আব্দুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই ও মাওলানা শফিকুর রহমান।

তাদের মধ্যে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন ও মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার কারাগারে আটক রয়েছেন। বাকিরা পলাতক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ, মাওলানা ইয়াহিয়া ও মাওলানা আবু তাহের।

Advertisement

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার পর নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা করেন।

২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এরপর ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিলের শুনানির জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে। হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হলেও বিস্ফোরক মামলাটি ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

এফএইচ/আরএস/জেআইএম