ভ্রমণ

আনন্দ-উচ্ছ্বাসে নদী ভ্রমণ

‘বন্ধুত্ব প্রগাঢ় হোক নদীর উচ্ছ্বাসে’- এই স্লোগানে উৎসব আর আনন্দঘন পরিবেশে শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়রি) চাঁদপুরে রোটারী জেলা পিকনিক ও নদী ভ্রমণ ‘মেঘনা বিলাস’ অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ৩০টি জেলার ১৪৭টি ক্লাবের ৮ শতাধিক রোটারিয়ান ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এই পিকনিকে অংশ নেন।

Advertisement

রোটারী জেলা পিকনিক ও নদী ভ্রমণ ‘মেঘনা বিলাস’ কে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে সাজ-সাজ রব বিরাজ করে। পিকনিক উপলক্ষে চাঁদপুরের বিভিন্ন সড়ক ও সড়ক দ্বীপ সাজানো হয় ফেস্টুন ও ব্যানার দিয়ে। তৈরি করা হয় স্বাগত গেট। পরে মেঘনা নদীর ঢেউয়ের তালে-তালে নেচে, গেয়ে সদস্যরা সারা দিন উপভোগ করে এই নৌ-ভ্রমণ। অংশ নেয়া প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শিশুরাও উৎফুল্ল হয়ে উঠে।

কৌতুক অভিনেতা কাজলের পরিবেশনা ও ফোক সংগীত শিল্পী ফকির সাহাবুদ্দিনের গানে সারাদিন মাতিয়ে রাখেন ভ্রমণকারীদের। তাদের সঙ্গে ছিলেন সংগীত শিল্প ইমরাত শর্মি, রোজ ইসলাম ও সাজু ইসলাম। নদীর ঢেউ ও সংগীতের মুর্ছনায় পিকনিকে অংশগ্রহণকারীদের মাতিয়ে রাখে সর্বক্ষণ। সেই সঙ্গে মিনি বায়স্কোপ এবং ‘মিকি মাউস’ ও ‘মিস্টার পাতলু’ শিশু-কিশোরদের আনন্দ দেয় দিনভর।

চাঁদপুর লঞ্চঘাট এলাকায় সকাল সাড়ে ৯টায় রোটারী জেলা গর্ভনর রোটারিয়ান দিলনাঁশী মোহ্সেন বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে পিকনিক ও নদী ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রোটারিয়ান আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী ও সাবেক রোটারী জেলা গভর্নর রোটারিয়ান ড. মঞ্জুরুল হক চৌধুরীসহ রোটারিয়ানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ ব্র্যান্ডিং জেলা খ্যাত চাঁদপুর রোটারী জেলা (আরআই ডিস্ট্রিক্ট-৩২৮২) পিকনিক কমিটির ব্যতিক্রমী আয়োজন হিসেবে লঞ্চ ভ্রমণ ‘মেঘনা বিলাস’ পিকনিকের আয়োজন করে। আয়োজনকে উৎসবমুখর করতে শহরময় ব্যানার-ফেস্টুন আর তোরণে সাজিয়ে তোলা হয়।

পিকনিক উপলক্ষে চাঁদপুরের বিলাসবহুল লঞ্চ ‘রফরফ’ বর্ণিলভাবে সাজানো হয়। আয়োজককরীরা আকর্ষণীয় র্যফেল ড্র আর পিঠা উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দেশীয় বিভিন্ন খেলা, ইলিশ সমৃদ্ধ দুপুরের খাবার, ইলিশ বিক্রির স্টল এবং ফানুস ও আতশবাজির উৎসবের মাধ্যমে পিকনিকে উপভোগ্য করে তোলে। ফলে অংশগ্রহণকারীরা অতিরিক্ত আনন্দ উপভোগ করে।

আয়োজন সফল ও সার্থক করতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল সার্জন, চাঁদপুর পৌরসভা ও গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংস্থা সহযোগিতা করেন। পিকনিকে অংশ নেয়া সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য শহরের অভ্যন্তরে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। পাশাপাশি ব্যস্ততম নৌ-টার্মিনাল ঘাটের সড়কটি ওয়ান-ওয়ে করা হয়। ফলে যাত্রীসহ সর্বসাধারণ দ্রুত সময়ে নৌ-ঘাটে পৌঁছতে সক্ষম হয়।

উদ্বোধনের পর ‘মেঘনা বিলাসে’ নেয়া সদস্যরা চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে ডাকাতিয়া নদীতে শহরের লন্ডন ঘাট পর্যন্ত ঘুরে চলে যায় ইলিশের প্রজনন কেন্দ্র ষাটনল পর্যন্ত। বিকেলে সেখান থেকে আনন্দময় পরিবেশে আবারো ফিরে আসে চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে। সন্ধ্যায় লঞ্চের ভেতরে রোটারী ইন্টারন্যাশনালের ১শ’ ১৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে কেক কাটা এবং লঞ্চঘাট এলাকায় করা হয় আতশবাজি ও ফানুস উৎসব।

Advertisement

পিকনিক চলাকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রোটারী জেলা গর্ভনর রোটারিয়ান দিলনাঁশী মোহ্সেন, সাবেক জেলা গভর্নর রোটারিয়ান ড. মঞ্জুরুল হক চৌধুরী, জেলা গভর্নর নির্বাচিত (২০২০-২১) রোটারিয়ান ডা. বেলাল আহমেদ, জেলা গভর্নর নির্বাচিত (২০২১-২২) রোটারিয়ান আবু ফয়েজ খান চৌধুরী, রোটারী জেলা পিকনিক মেঘনা বিলাস-২০১৯ এর চিফ কো-অর্ডিনেটর রোটারিয়ান কাজী শাহাদাত, রোটারী জেলা পিকনিক কমিটির চেয়ারম্যান রোটারিয়ান শেখ মনির হোসেন বাবুল, সদস্য সচিব রোটারিয়ান অধ্যাপক জাকির হোসেন আজাদ, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান অ্যাড. সাইয়েদুল ইসলাম বাবু, চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটারিয়ান নূরুল আমিন খান আকাশ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, রোটারী জেলা পিকনিক ও নদী ভ্রমণ ‘মেঘনা বিলাস-২০১৯’ আয়োজন করে চাঁদপুর ও চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাব।

জেএইচ/আরআইপি