ফিচার

সাড়া ফেলেছে পুলিশের রক্তদান কর্মসূচি

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চলছে বাঙালি লেখক-পাঠক-প্রকাশকের প্রাণের উৎসব ‘অমর একুশে বইমেলা’। এই বইমেলায় সাড়া ফেলেছে পুলিশ ব্লাড ব্যাংকের রক্তদান কর্মসূচি। এ কর্মসূচিতে সহযোগী হিসেবে রয়েছে মি. নুডলস। কর্মসূচি চলবে মেলার শেষদিন পর্যন্ত।

Advertisement

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বের হওয়ার পথে হাতের বামপাশে রয়েছে রক্তদান কর্মসূচির স্টলটি। স্টলে ঢোকার আগেই চোখে পড়ল ভেতরের কার্যক্রম। রক্তদানে আগ্রহীরা আসছেন সেখানে। কথা বলছেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদের সঙ্গে। তিনি নামযুক্ত করে পাঠাচ্ছেন রক্তদান টেবিলে।

রক্তদানে মানুষের আগ্রহ সম্পর্কে জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতিই বেশি।’

> আরও পড়ুন- নারীদের আশ্রয়স্থল এসপি শামসুন্নাহার

Advertisement

জমাকৃত রক্তের বণ্টন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখানে দান করা রক্ত পুলিশ ব্লাড ব্যাংকে জমা হয়। এরপর চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হবে।’

রক্তদাতাদের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে হারুন বলেন, ‘এখানে যারা রক্ত দিচ্ছেন, তাদের ডোনার কার্ড দেওয়া হয়। যে কার্ডের মাধ্যমে পরবর্তীতে তারা প্রয়োজনীয় রক্ত সংগ্রহ করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রক্তদাতাদের উপহার হিসেবে মি. নুডলসের সৌজনে নুডলস, কেক ও কোট পিন দেওয়া হয়। এছাড়া দানকৃত রক্তের পাঁচটি পরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়া হয়।’

> আরও পড়ুন- ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চান শফিক

Advertisement

হারুন অর রশিদের সাথে আলাপ করতে করতেই উপস্থিত হন এক রক্তদাতা। তিনি চট্টগ্রামের লোহাগড়া থেকে এসেছেন। পেশায় শিক্ষক মঞ্জুর আলম বলেন, ‘বইমেলায় বই কিনতে এসেছি। এসে এ আয়োজন দেখে ভাবলাম, রক্ত দিয়ে যাই। এরআগে সন্ধানীকে একবার রক্ত দিয়েছিলাম। কারণ আমার রক্তে যদি অন্যের উপকার হয়, তাহলে আমার জন্ম সার্থক।’

রক্ত দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন তানজিয়া হক। তিনি শিক্ষার্থী। অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেক তরুণ-তরুণীর রক্ত দেওয়া উচিত। কারণ আমার রক্তে বেঁচে যেতে পারে একটি প্রাণ। এছাড়া রক্তদানে স্বাস্থ্যেরও কোন অবনতি হয় না।’ এছাড়াও এখানে রক্তদান করেছেন গুলশান ডিবি কার্যালয়ের এডিসি গোলাম সাকলায়েন।

জানা যায়, অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এমন মহতী উদ্যোগ নিয়েছে। এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ডিসি হেড কোয়ার্টার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

> আরও পড়ুন- এসপি জিহাদুলের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প

২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর পুলিশ ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন ডিএমপির তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম বার পিপিএম। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেড কোয়ার্টারে ডিআইজি (প্রশাসন) পদে কর্মরত রয়েছেন।

কর্মসূচির সহযোগী প্রতিষ্ঠান মি. নুডলসের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা তোষন পাল জানান, সংগৃহিত রক্ত পুলিশ ব্লাড ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হয়। যে কেউ এ ব্লাড ব্যাংক থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে ব্লাড ব্যাগ ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সেবার জন্য ৫০০ টাকা চার্জ নেওয়া হয়।

‘রক্তে মোরা বাঁধন গড়ি, রক্ত দিবো জীবন ভরি’—স্লোগানে এ রক্তদান কর্মসূচি বইমেলার শেষদিন পর্যন্ত চলবে। এখানে যে কেউ স্বেচ্ছায় তাদের রক্তদান করতে পারবেন।

এসইউ/পিআর