দীপাবলির পর দূষণে দিল্লিকে ছাড়িয়ে গেছে কলকাতা। এমনকি কলকাতায় এ বছরের দীপাবলিকে সাম্প্রতিক সময়ের সব চেয়ে ‘দূষিত’ বলে জানিয়েছেন দেশটির পরিবেশ গবেষক ও পরিবেশকর্মীরা। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদেও এমন তথ্য দিয়েছে।
Advertisement
গত ৭ নভেম্বর ছিল দীপাবলি। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য মতে, দীপাবলির পরের সাত দিনে বাতাসের মানের সামান্যতম উন্নতিও হয়নি। এখনে কোনো কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বাতাসের গুণমানের সূচক নির্ভর করে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা ও ভাসমান অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার উপর।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক সংবাদে জানানো হয়, গত ৮ নভেম্বর রাত ১১টায় বিটি রোডের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং ময়দানের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় পিএম ১০-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ৪৬১.০৩ মাইক্রোগ্রাম এবং ২৪৫.৯১ মাইক্রোগ্রাম। পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ২৮৩.৪৭ ও ১৬৩.৪৫ মাইক্রোগ্রাম।
তার পরের দিন (৯ নভেম্বর) সেই মাত্রা বেড়ে যায়। সে দিন রবীন্দ্রভারতী ও ভিক্টোরিয়া এলাকায় পিএম ১০-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭০১.০৩ ও ২৫৩.৩ মাইক্রোগ্রাম। ওই দুই এলাকায় পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৩৭৩.৯৩ এবং ১৭২.৪ মাইক্রোগ্রাম।
Advertisement
১২ নভেম্বর (সোমবার) সেই মাত্রা শীর্ষে ওঠে। রবীন্দ্রভারতী এলাকায় সে দিন প্রতি ঘনমিটারে পিএম ১০-এর উপস্থিতি ছিল ১২৪৪.২৩ মাইক্রোগ্রাম।
কলকাতার যেখানে এমন হাল সেখানে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বলছে, দিল্লির আনন্দবিহার এলাকায় দীপাবলির পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে ৯ নভেম্বর বাতাসে পিএম ১০-এর পরিমাণ ছিল সর্বাধিক ৭২২.০৫ মাইক্রোগ্রাম। সে দিন ওই এলাকায় প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ৫০৩.৯১ মাইক্রোগ্রাম।
চলতি সপ্তাহের তথ্য মতে, গত মঙ্গলবার রবীন্দ্রভারতী ও ভিক্টোরিয়া এলাকায় পিএম ১০ এবং পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৬৪১.২ এবং ৩৩১.৬৩ মাইক্রোগ্রাম। পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল ৪১১.১ এবং ১৯৮.৪৭ মাইক্রোগ্রাম। সে দিনও দিল্লি দূষণে পিছিয়ে। কারণ, আনন্দবিহার এলাকায় পিএম ১০-এর উপস্থিতি ছিল ৬৩১.৫৯ মাইক্রোগ্রাম।
শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সে দিন রবীন্দ্রভারতী ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় পিএম ১০-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৪৮৫ ও ২৩১.১৭, পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ২২৪.১ এবং ১২৮.৯৭। তবে রোববার দিল্লির থেকে কলকাতার দূষণ কমই ছিল।
Advertisement
দিল্লিকে প্রায়ই দূষণে কলকাতা ছাপিয়ে যাচ্ছে কেন?পরিবেশ গবেষকদের একাংশ বলছে, দূষণের নিত্য নতুন উৎস বের হচ্ছে। কালীপূজা বা ছটপূজায় আতসবাজির দাপট এবং যানবাহনের দূষণ তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে জঞ্জালের স্তূপে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া। বিশেষ করে শীতকালে যত্রতত্র এ ঘটনা চোখে পড়ছে।
আরএস/জেআইএম