কৃষি ও প্রকৃতি

তরতাজা মাছ পাবেন যেখানে

মাছে-ভাতে বাঙালি আমরা। ভাতের পরেই আমাদের চাহিদায় মাছ থাকে। হাওর-বাওড়, নদী-নালা, পুকুর, খাল-বিল, সমুদ্র আমাদের মাছের জোগান দেয়। জেলেদের ধরা মাছ আমাদের পাতিলে আসতে কয়েকবার হাত বদল হয়। সে রকম একটি হাত বদলের হাট কক্সবাজার ফিশারি ঘাট। বিস্তারিত জানাচ্ছেন হুসাইন আরমান-

Advertisement

কক্সবাজার বিমানবন্দরের পাশে বাকখালী নদীর তীরের এই ফিশারি ঘাটে খুব সকালে দেখা যাবে প্রচুর সামুদ্রিক মাছ। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন ফিশারি ঘাটের (বিএফডিসি) মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (মাছ খালাস ঘাট) রয়েছে। এখানে মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন করা হয়।

কক্সবাজার শহরের ৬ নম্বর ঘাটে রয়েছে তিনটি মাছ অবতরণ ঘাট ও নুনিয়াছড়ায় রয়েছে আরো একটি অবতরণ ঘাট। এছাড়া শহরতলীর নাজিরারটেক এলাকায় ২টি, কলাতলি পয়েন্টে ১টি ও কলাতলি বড়ছড়ায় ১টিসহ মোট ১০টি ঘাটে ফিশিং ট্রলার ও নৌকা থেকে প্রতিদিন মাছ খালাস হয়ে আসছে।

> আরও পড়ুন- ইলিশের জীবনরহস্য উন্মোচন করলো বাংলাদেশ

Advertisement

সূর্য ওঠার আগেই জেগে ওঠে এই ঘাট। রাতভর জেলেরা মাছ ধরে। ভোর হতেই সেই মাছ বাজারে উঠতে শুরু করে। ভোর ৫টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। সাধারণত ভোরবেলায় মাছের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। একই জায়গায় দুইবার হাত বদল হয় মাছগুলো। প্রথমে নৌকায় থাকতে জেলেদের কাছ থেকে কিনে নেয় স্থানীয় পাইকাররা। তারা মাছগুলো কিনে নিয়ে বাজারে সাজায়। তাদের কাছ থেকে কিনে নেয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বেপারিরা।

তরতাজা ও সুস্বাদু সামুদ্রিক মাছগুলো দেখলে লোভ সামলানো কঠিন। প্রায় পঞ্চাশের অধিক প্রজাতির মাছের সমাহার এখানে। মাছ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দামে সেগুলো বিক্রি হয়। প্রতিকেজি সুরমা মাছ (বড়) ২২০, তেল্লা ৪০০, ইলিশ ৬০০-৮০০, পাতা ১২০, বুইজ্জা ৩০০, চাপা ৩০০, ননাইয়া ৪০০, সামুদ্রিক বাইন ৪০০, চুরি ২০০, কোরাল ৫০০, লাল কোরাল ৬০০, তিল্লি ৪০০, বুম বাটা ১৫০, টুইট্টা ১৫০, পোয়া ৩৫০, করিত্তা ২৫০-৩০০, চুরি (বড়) ৪০০, রুপচাঁদা ৪০০-৮০০, কাকড়া ২৫০, পটকা ৩০, হাঙ্গর ১২০, শাপলা ১৫০, বাইলা ২০০, পাইসসা ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

মৌসুম অনুযায়ী মাছের দাম ওঠানামা করে। আবার কোনো কোনো মাছ হালি, শত, হাজার, মণ, পাল্লা হিসেবেও বিক্রি হয়। প্রতিদিন প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মাছের কারবার হয় এই ঘাটে। এখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মাছ সরবরাহ করা হয়। প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বিদেশেও রফতানি হয়।

> আরও পড়ুন- মাছের পোনা সংগ্রহের আধুনিক পদ্ধতি

Advertisement

আপনিও যেতে পারেন। চাইলে তরতাজা মাছ কিনে আনতে পারবেন। সেখান থেকে বাসায় আনতে আনতে মাছ যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য পাশেই প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে গিয়ে বা ব্যবসায়ীদের বললে তারা আপনার মাছ ভালোভাবে প্যাকেট করে দেবে।

এসইউ/পিআর