শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। গত ২৬ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে রনিল বিক্রমসিংহকে বরখাস্ত করেন। ওই দিন রাতেই তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ান। সিরিসেনা পরদিনই বিক্রমসিংহের মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
Advertisement
বরখাস্তের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে ২৭ অক্টোবর পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকেন বিক্রমসিংহ। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য তার পক্ষে রয়েছেন দাবি করে তিনি এ অধিবেশন ডাকেন। বিক্রমসিংহের এ দাবির পর জাতীয় সংসদ ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেন সিরিসেনা। এরপর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে পার্লামেন্টের অধিবেশন ১৬ নভেম্বর থেকে এগিয়ে ৫ নভেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেছেন তিনি।
পার্লামেন্টের এই অধিবেশন দেশটির রাজনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা নতুন প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসেকে সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজাপাকসে পরাজিত হলে সেটা একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনারও পরাজয় হিসেবে চিহ্নিত হবে।
এদিকে বিপত্তি বেঁধেছে অন্য জায়গায়। এমনিতেই ক্ষমতায় এসে বেশ চাপে রয়েছেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তার ওপর আগামী অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারলে ক্ষমতাচ্যুত হতে পারেন তিনি। তামিল ন্যাশনাল অ্যালাইন্স (টিএনএ) রাজাপাকসের এরকম নিয়োগকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে অভিহিত করেছেন। শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করতে রনিল বিক্রমসিংহকে সমর্থন দেবে তারা।
Advertisement
সমস্যার সূত্রপাত এখান থেকেই। কেননা দেশটির সংসদে মোট ২২৫ টি আসনের মধ্যে তামিল ন্যাশনাল অ্যালাইন্সের ১৫ জন সংসদ সদস্য আছেন। এদিকে এখনো বিক্রমসিংহের প্রতি সমর্থন রয়েছে ১০০ জন সংসদ সদস্যের। রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট পাশ করতে হলে প্রয়োজন পড়বে ১১৩টি ভোটের।
তবে তামিল ন্যাশনাল অ্যালাইন্সের এই সমর্থন সত্ত্বেও রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করা কঠিন হবে। কারণ রাজাপাকসেও ইতোমধ্যে বিক্রমসিংহের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) ছয় সংসদ সদস্যকে তার দলে ভেড়ানোর ব্যবস্থা করছেন। আগামী ৫ নভেম্বরের সংসদ অধিবেশন বলে দেবে কে হবেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী।
এসএ/এমএস
Advertisement