নাশকতার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন আবেদন বিধি সম্মত না হওয়ায় আবারও জামিন চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, বিচারিক আদালতের জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়ার যে আদেশটি রয়েছে সেটি জামিন আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে।
Advertisement
রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মুজিবর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশিরউল্লাহ। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল ও এ কে এম এহসানুর রহমান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশিরউল্লাহ জানান, কুমিল্লায় বিশেষ ক্ষমতার আইনে করা নাশকতার মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন চেয়ে পুনরায় সম্পূরক আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
তিনি জানান, আজ আদালতের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, কুমিল্লার আদালতে জামিন নামঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে তারা যখন আপিল আবেদন করেন তখন (অধস্তন) বিচারিক আদালতের আদেশের সার্টিফায়েড কপি আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করেননি। হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আপিল আবেদনের সময়ই অধস্তন আদালতের সার্টিফায়েড কপি সংযুক্ত করার (রুলস) বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা তারা তা করেননি। খালেদার জামিন আবেদনের সঙ্গে, দ্বিতীয় দিন ওই কপি সম্পূরক হিসেবে সঙ্গে যুক্ত করেছেন। তাই আবেদনটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাখিল হয়নি বলে আপত্তি তোলা হয়েছে।
পরে আদালত খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীকে ডেকে এই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে পুনরায় সম্পূরক আপিল আবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে একটি কাভার্ডভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও আশপাশের বেশ কিছু যান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে বাস পোড়ানোর ঘটনায় ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করা হয়। একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে আট যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলাটি করে পুলিশ।
২০১৭ সালের ২ মার্চ ওই মামলায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে এ মামলায় জামিন চাইলে কুমিল্লার বিচারিক আদালত গত ১৩ সেপ্টেম্বর তা খারিজ করে দেন। পরে সে আদেশের বিরুদ্ধে গত ২ অক্টোবর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আপিল আবেদন জমা দেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
Advertisement
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম