ভ্রমণ

৪০ জেলা ঘুরে বিপন্ন মানুষের গল্প শুনেছেন ডালিম

ভ্রমণের শুরুটা শৈশব থেকেই। যখন বুঝতে শিখেছেন। সপ্তম-অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় সাইকেল চালিয়ে চলে যেতেন মাইলের পর মাইল। চিনতেন নতুন নতুন পথ। পরিচিত হতেন নতুন ইউনিয়নের সাথে। ভ্রমণের এ ঝোঁকটা বড় হওয়ার পর আরও চেপে বসে। এরপর তিনি একজন ব্যতিক্রমী পর্যটক। বলছি তরুণ সাংবাদিক সোলাইমান ডালিম হাজারির গল্প।

Advertisement

শুধু পর্যটন কেন্দ্র নয়। পিছিয়ে পড়া, বিপন্ন, বিচ্ছিন্ন জনপদ ভ্রমণ পছন্দের তালিকায় রেখেছেন তিনি। এ পর্যন্ত অনগ্রসর জনপদের ৪০ জেলা ভ্রমণ শেষ করেছেন! এরমধ্যে মহেশখালী, সেন্টমার্টিন, সন্দ্বীপ, মনপুরা, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া, চাঁদপুর, হাইমচর, শরীয়তপুর, সুবর্ণচর, উড়িরচর, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, তুলিয়া, বগুড়া, কিশোরগঞ্জের নিকলী, মিঠামাইন, ভৈরব, খাগড়াছড়ি, গুইমারা, রামগড় ভ্রমণ করেছেন ডালিম।

ভ্রমণের সময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অন্তরে গাঁথার পাশাপাশি গল্প করেছেন বিপন্ন মানুষের সঙ্গে। নোটবুকের পাতা ভরেছেন এসব মানুষের গল্প দিয়ে। সহজ জীবনের সংজ্ঞা কিংবা জীবনের গতিপ্রকৃতি উঠে এসছে তাতে। এছাড়াও পশু-পাখির সাথে সময়, নদীতীরে বসবাসরত মানুষ নিয়ে গবেষণা করে সময় পার করেছেন তিনি।

> আরও পড়ুন- গারওয়াল হিমালয়ে লাল-সবুজের পতাকা

Advertisement

সোলাইমান ডালিম হাজারী উপকূলীয় জেলা ফেনীর ছাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়নের পূর্বদেবপুর গ্রামের শেখ আহমেদ হাজারীর ছেলে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএসএস (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) অনার্স শেষ করে পড়ছেন মাস্টার্সে। সাংবাদিকতার সুবাদেও বেশ পরিচিতি অর্জন করেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে।

ব্যতিক্রমী এ ভ্রমণের কারণ সম্পর্কে ডালিম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই নতুন জনপদ দেখার ইচ্ছা থেকে ভ্রমণ শুরু হয়। তৃণমূলে যাওয়া ছাড়া মানুষের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র প্রত্যক্ষ করা যায় না। আমি সহজ জীবনের সংজ্ঞটা জানতে চাই। যার জন্য আমাকে এসব বিপন্ন জনপদ পছন্দের তালিকায় রাখতে হয়েছে।’

দীর্ঘ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ডালিম বলেন, ‘বেঁচে থাকার এক রসদ ভ্রমণানুভূতি। ভ্রমণ করেই স্বাভাবিক জীবনে টিকে থাকতে চাই। ভ্রমণ করে বহু কিছু শিখেছি। জীবনের জটিলতাকে কীভাবে পরাজিত করতে হয়, তা ভ্রমণ থেকেই শেখা যায়। কিছু করতে হলে সাহসিকতার মনোভাবটা জরুরি। ভ্রমণের মাধ্যমেই জীবনটাকে জানছি- পড়ছি।’

> আরও পড়ুন- ভ্রমণকাহিনিতে সেরা রাঙ্গামাটির মুমু

Advertisement

বিপন্ন জনপদে ভ্রমণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একেক জনপদের মানুষের যাপিত জীবন ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বাঁচতে শেখাচ্ছে। ভ্রমণ করতে গিয়ে আসলে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি। প্রকৃতপক্ষে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যদি সঠিক পরিকল্পনা এবং মনোবল ধরে রাখা যায়, তাহলে যে কোনো সমস্যা কিংবা ঝুঁকি অতিক্রম করা যায়।’

ভবিষ্যত স্বপ্ন নিয়ে ডালিম বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের কলকাতা, আগরতলা, উদয়পুর, আসাম, মিজোরাম ঘুরেছি। যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার জনপদ ও সহজ-সরল মানুষের জীবন-প্রকৃতি সম্পর্কে ভ্রমণকাহিনি লিখেছি। একদিকে যেমন ভ্রমণ হচ্ছে, সহজ মানুষের জীবন-প্রকৃতি শেখা হচ্ছে, ঠিক অন্যদিকে আমার জীবনে নতুন কিছু অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। তাই ভ্রমণকাহিনিগুলো নিয়ে বই প্রকাশ করার পরিকল্পনা আছে।’

এসইউ/এমএস