দণ্ড নিয়ে খালেদার আপিল শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিল শুনানি আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত।

রোববার আপিল আবেদনের শুনানি না করে মামলার কার্যক্রম আগামীকাল পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে গত বুধবার (২৫ জুলাই) শুনানির পর রোববার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত মুলতবি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার জামিন আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

আদালতে আজ খালেদার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান ও এজে মোহাম্মদ আলী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম।

শুনানিকালে খালেদা জিয়ার পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, আমিনুল হক, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, জয়নুল আবেদীন, আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরোদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, রাগীব রউফ চৌধুরী, এহসানুর রহমান, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মো. ফারুক হোসেন, আনিছুর রহমান খান, আইয়ুব আলী আশরাফী, মির্জা আল মাহমুদ, সালমা সুলতানা সোমা, ব্যারিস্টার এম. আতিকুর রহমান ও ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ।

মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পাঁচ মাসের মাথায় গত ১২ জুলাই হাইকোর্টে করা এ আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। এই মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। এরপর থেকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন তিনি।

ওই সাজার বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট থেকে চার মাসের জামিন পান খালেদা, যা আপিল বিভাগে বহাল থাকে। ওই জামিনের মেয়াদ বাড়াতে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ জুলাই খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ ১৯ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন হাইকোর্ট। এরপর ২৬ জুলাই পর্যন্ত জামিন বাড়ানো হয়, যা বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার কথা। পরে জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ জুলাই করা হয়। তবে, অন্য মামলা থাকায় তিনি কারামুক্তি পাননি।

গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়ার চার মাসের জামিনের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। এরপর গত ১৬ মে তা বহাল রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। পরে খালেদা জিয়া ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল মামলার নিষ্পত্তিতে আপিল বিভাগের আদেশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদন মুলতবি রেখে আপিল বিভাগ বলেছেন, খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ না হলে সময়ের প্রার্থনা বিবেচনা করা হবে। সে পর্যন্ত আবেদনটি স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখা হয়।

দণ্ডের রায় ঘোষণার ১১ দিন পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা ওই আবেদন করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করা হয়।

এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। এখন তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের রুল এই আদালতে শুনানি হচ্ছে।

এফএইচ/বিএ/জেআইএম